ভাড়া নিয়ে ‘নৈরাজ্য’ : যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রস্তাব

ভাড়া নিয়ে ‘নৈরাজ্য’ : যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রস্তাব
ডন প্রতিবেদন : জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর গণপরিবহনে ভাড়া বাড়ানোয় রাজধানীসহ সারাদেশে ‘নৈরাজ্য’ সৃষ্টি হয়েছে। যাত্রীদের সঙ্গে পরিবহনচালক ও শ্রমিকদের বচসা, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে চারটি প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) দেওয়া এক চিঠিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি এ প্রস্তাব পাঠায়। চিঠিতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরী এবং দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার সরেজমিন চিত্র তুলে ধরে সমিতি। সমিতি বলেছে, ডিজেলচালিত বাস-মিনিবাসে ভাড়া বাড়ার কথা থাকলেও সিএনজি, পেট্রোল ও অকটেনচালিত সব ধরনের বাস-মিনিবাস, হিউম্যান হলার, টেম্পো, অটোরিকশা, প্যাডেলচালিত রিকশা ও মোটরসাইকেলে যাতায়াতে ভাড়া বেড়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরী এবং শহরতলিতে চলাচল করা গণপরিবহনে সরকারনির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েক গুণ বাড়তি ভাড়া মানুষের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পক্ষ থেকে পাঠানো ওই চিঠিতে প্রস্তাব করা হয় : দেশে অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো গণপরিবহন ভাড়া বাতিল করে ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য ভাড়া নির্ধারণ করা, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে দেশে সব ধরনের যানবাহনের সামনে সেটি কোন ধরনের জ্বালানির তা উল্লেখ করে স্টিকার লাগানো, রাজধানীর বাসগুলোতে ওয়েবিল পদ্ধতি বাতিল করা, গণপরিবহনে টাকা তুলতে মালিকদের চাপানো দৈনিক টার্গেট বাতিল করা। চিঠিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি অভিযোগ করে, ‘‘গণপরিবহনে ‘ভাড়ানৈরাজ্য’ পর্যবেক্ষণে সংগঠনটির উপকমিটির সদস্যরা ঢাকা, চট্টগ্রামের কয়েকটি বাস রুট ও দূরপাল্লার কয়েকটি রুটে বাড়তি ভাড়া আদায়ের চিত্র দেখতে পেয়েছেন। যেমন, গুলিস্তান থেকে শাহবাগের দূরত্ব সাড়ে ৩ কিলোমিটার। এ পথে আগে যেসব বাসে ১০ থেকে ২৫ টাকা ভাড়া আদায় করা হতো, এখন ১৫ থেকে ৩৫ টাকা আদায় করা হচ্ছে। অথচ এ পথে সরকার নির্ধারিত ভাড়া ১০ টাকা।’’ চট্টগ্রাম মহানগরীর বেশ কয়েকটি বাস রুটে বেশি ভাড়া আদায়ের চিত্র তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়, ‘ওই মহানগরীর শাহ আমানত সেতু থেকে পটিয়া ২০ কিলোমিটার পথে ৩৫ টাকা ভাড়ার জায়গায় আগে ৬০ টাকা নেওয়া হতো। এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।’ সমিতি বলছে, বাস-মিনিবাসের ভাড়া বাড়ারসঙ্গে দেশব্যাপি লেগুনা, হিউম্যান হলার, নছিমন-করিমন, অটো-টেম্পো, অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ সব ধরনের যানবাহনের ভাড়া অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এসব বাহনের ৯৮ শতাংশ সিএনজিচালিত হলেও বাসভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে তাঁরা অন্যায়ভাবে ভাড়া বাড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে যাত্রী সাধারণ চরম অসহায় হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায় সমিতি।