ভাগনের আবদার পূরণে বাইকচালককে হত্যা করে মুখ পুড়িয়ে দেওয়া হয়!

ভাগনের আবদার পূরণে বাইকচালককে হত্যা করে মুখ পুড়িয়ে দেওয়া হয়!

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : নেত্রকোণার মোহনগঞ্জের দেওরাজান বালুরচর থেকে গত ১৪ মার্চ গলাকাটা ও মুখমণ্ডল পুড়িয়ে দেওয়া লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে র‌্যাব। লাশটি ছিলো ঢাকার মোটরসাইকেলচালক সাইফুল ইসলামের। তাঁর বাড়ি ঝিনাইদহে। ভাগনের মোটরসাইকেল কেনার আবদার পূরণ করতে গিয়ে মাসুক মিয়া ঢাকা থেকে ভাড়ায় নেত্রকোণায় নিয়ে সাইফুলকে হত্যা করে। এতে সহযোগিতা করেন আল ইমরান ফয়সাল। খুনের পর পরিচয় শনাক্ত যাতে না হয়, সেজন্য সাইফুলের মুখমণ্ডল আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় তাঁরা। উদ্দেশ্য ছিলো মোটারসাইকেল ছিনতাই করা।

নেত্রকোণায় ওই হত্যার ঘটনায় রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে মাসুক ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এনিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাব। সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে সাইফুলের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তার বাবার নাম আব্দুস সামাদ। ওই ঘটনার পর নিহতের বড় ভাই মোহনগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানতে পারে, মাসুক তার সহযোগী ফয়সালকে জানায় তার ভাগনের জন্য একটা মোটরসাইকেল কিনতে হবে। এজন্য ভাগনের কাছ থেকে মাসুক ২৫ হাজার টাকা নিয়ে ফয়সালকে দেয়। কিন্তু ফয়সাল মোটরসাইকেল দিতে পারে না। পরে দু’জন মিলে সাইফুলের মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। তারা গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ছুরি কেনে। ১৩ মার্চ সাইফুলের মোটরসাইকেল ভাড়া করে তারা এক সঙ্গে নেত্রকোণার উদ্দেশ্যে বের হয়। ময়মনসিংহ শহরে পৌঁছালে ট্রাফিক পুলিশ তাদের আটকালে ফয়সাল নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পার পেয়ে যায়। পরে রাত ৩টার দিকে তারা সাইফুলকে হত্যা করে পেট্রোল ঢেলে লাশের মুখমণ্ডল পুড়িয়ে দেয়। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও সাইফুলের মোবাইল পানিতে ফেলে মোটরসাইকেল নিয়ে চলে আসে তারা। 

কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেপ্তার মাসুক ও ফয়সাল মূলত আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল ছিনতাই ও চুরি চক্রের সদস্য। রাজধানীর মিরপুর এলাকায় বসবাস করত মাসুক। দিনে রাজমিস্ত্রীর কাজ আর সন্ধ্যায় ভ্যানে করে কাপড় বিক্রির আড়ালে সে মোটরসাইকেল ছিনতাই করত। আর ফয়সাল ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালানোর পাশাপাশি ছিনতাই করত। আসামিদের মোহনগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে র‌্যাব।