পোশাক পরা নিয়ে নরসিংদী রেলস্টেশনে তরুণীকে হেনস্তা!

পোশাক পরা নিয়ে নরসিংদী রেলস্টেশনে তরুণীকে হেনস্তা!

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঙলা কাগজ; নরসিংদী : নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে পোশাক পরার অভিযোগ তুলে এক তরুণীকে হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। আর এমন ঘটনায় হেনস্তাকারী একজনের পরিচয় প্রকাশ করেছে পুলিশ।

ওই হেনস্তাকারী ৩৮ বছর বয়সী ব্যক্তির নাম ইসমাইল হোসেন। তার বাড়ি নরসিংদী সদরের নজরপুর ইউনিয়নের বুদিয়ামাড়া গ্রামে। তিনি একজন রাজমিস্ত্রি।

ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, শুক্রবার (২০ মে) রাতে রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে আটকের পর ডিবি ইসমাইলকে ভৈরব রেলওয়ে থানায় হস্তান্তর করে। তার বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অন্য হেনস্তাকারীদের খোঁজা হচ্ছে।

রেলওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ ইমায়েদুল জাহিদী বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘আমরা ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে হেনস্তার শিকার তরুণীর সঙ্গে থাকা এক তরুণকে শনাক্ত করেছি। তাঁকে ফোন করে রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে এসে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছিলো, তবে তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা থানা-পুলিশে জড়াবেন না। এরপর থেকে তাঁর মোবাইল বন্ধ।’

লিচু বিক্রেতা হামিদা বলেন, ‘ঝগড়া শেষে বাটিকের সালোয়ার-কামিজ পরা ওই নারী আমার কাছ থেকে চেয়ে পানি খান। এরপর ঢাকাগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনে উঠে চলে যান। তিনি এই পথের নিয়মিত যাত্রী নন। আমরা নিয়মিত যাঁরা যাতায়াত করে, তাদের চিনি।’

নরসিংদী রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টারের ঘরের সামনে দুটো ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা আছে।

ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার এটিএম মূছা জানান, এই ক্যামেরাগুলো নষ্ট। অন্য সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে দেওয়া আছে।

হেনস্তার ঘটনার সময় স্টেশন মাস্টারের দায়িত্বে ছিলেন নাইয়ুম মিয়া। ঘটনার পর থেকে শনিবার (২১ মে) দুপুর পর্যন্ত তিনি কাজে আসেন নি।

তার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছে বাঙলা কাগজ ও ডন। 

নাইয়ুম বলেন, ‘ভোরে আমি কন্ট্রোল রুমে বসে ছিলাম। সিলেটগামী উপবন এক্সপ্রেসকে সিগন্যাল দিচ্ছিলাম। তখন দেখি বাইরে কিছু লোক জড়ো হয়ে আছে।

‘আমি গেটের সামনে আসতেই বাঁচাও বাঁচাও করে আধুনিক পোশাক পরা এক তরুণী ও আরেক তরুণ আমার কক্ষে আসে। তাঁদের কাউকে ফোন দিতে দেখলাম। অল্প সময়ের মধ্যে স্টেশন ও থানা পুলিশ আসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘“তখন মেয়েটি বলছিল, “আমি এসব পোশাক পরাতে এদের সমস্যা কী? তারা আমাদের হেনস্তা করছে। বাংলাদেশের সবাই শাড়ি পরে বেড়াবে নাকি?” পুলিশ তাদের সঙ্গে কথা বলে। আমি চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা মেইল ট্রেন থামানোর জন্য সিগন্যাল দিতে ব্যস্ত হয়ে যাই।’”