প্রধানমন্ত্রী : বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রস্তুত বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী : বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রস্তুত বাংলাদেশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কার্যকর অংশগ্রহণ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অবস্থান সুসংহত করেছে বলেই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।

সরকারপ্রধান বলেন, শান্তিরক্ষায় নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি দিয়ে প্রস্তুত করে তুলছে বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার (২৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে শান্তির জন্য কাজ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এজন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ জাতির পিতাকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৪ সালে আমরা জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করি। জাতিসংঘে তিনি ২৫ সেপ্টেম্বর ভাষণ দেন। সেই ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বিশ্বে সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধ না, আমরা শান্তি চাই। জাতির পিতার শান্তির সেনানীরূপে ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘ব্লু হেলমেট’ পরিবারের সদস্য হয়। আজ আমরা সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে গৌরবের ৩৪ বছর উদ্‌যাপন করছি। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে ৩৪ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রতিটি শান্তিরক্ষী তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন। আজ সমগ্র বিশ্বে শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বজন বিদিত।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন থেকে জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী মিশনের সদস্যরা যাতে তাঁদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেন, সেজন্য তাঁদের প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করে দিই। এতে তাঁরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে মিশনে যেতে পারেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ মিশনে অংশগ্রহণ সামরিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’ 

‘এ ছাড়াও শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা দেশের জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন, যা আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সমসাময়িক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশ্ব শান্তি নিশ্চিত করা অতীতের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তির দ্রুত প্রসার ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় এবং অরাষ্ট্রীয় অপশক্তিগুলো নতুন হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে বর্তমানে শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক ও জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এই নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আমরা আমাদের শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি দিয়ে প্রস্তুত করে তুলছি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর তরুণ সদস্যরা একুশ শতকের বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম। আমরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পরিষদের অধীন বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সদা প্রস্তুত।’