নারীবাদী আইকন কমলা ভাসিন আর নেই

নারীবাদী আইকন কমলা ভাসিন আর নেই
ডন প্রতিবেদন : উপমহাদেশে নারী অধিকার আন্দোলনের সুপরিচিত কর্মী, দক্ষিণ এশিয়ায় ‘ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং’ প্রচারণার অন্যতম মুখ কমলা ভাসিন ৭৫ বছর বয়সে মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাঁর ফুসফুসে পানি জমে গিয়েছিলো। অবস্থা খারাপ হলে শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ৩টার দিকে কমলা মারা যান বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। নারীবাদী এ কবি, লেখক তিন দশক ধরে ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জেন্ডার, উন্নয়ন, শান্তি ও মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করেছেন। কমলা নিজের পরিচয় দিতেন ‘প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে ওঠা সমাজবিজ্ঞানী’ হিসেবে। নারীবাদ ও নারী সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি একাধিক বই লিখেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ভরে উঠছে একের পর এক শোকবার্তায়। শোক জানানোদের তালিকায় দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনিশ সিসোদিয়া, সামাজিক আন্দোলনদের কর্মী হর্ষ মান্দেরও আছেন। ‘কমলা ভাসিন কেবল নারী অধিকার কর্মী ছিলেন না, ছিলেন লোকহিতৈষীও। তিনি জনস্বার্থে অসংখ্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যার মধ্যে আছে হিমাচল প্রদেশের জাগোরি, রাজস্থানে স্কুল ফর ডেমোক্রেসি। অনেকেই তাকে মিস করবে। তার আত্মা শান্তিতে থাকুক,’ টুইটারে লিখেছেন আইনজীবী, অধিকার কর্মী প্রশান্ত ভুষণ। পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত সুনিতা কৃষ্ণন লিখেছেন, ‘নারী আন্দোলনের বড় ক্ষতি হয়ে গেলো।’ সমাজকর্মী কবিতা শ্রীবাস্তব তার টুইটে লেখেন, ‘কমলার মৃত্যু ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ায় নারী আন্দোলনের জন্য বড় ধাক্কা। যত প্রতিবন্ধকতাই থাকুক, কমলা লড়তেন। তিনি আমাদের হৃদয়ে থাকবেন।’ ‘কমলা ভাসিন ছিলেন, থাকবেন নারীবাদীদের আশার বাতিঘর হয়ে। তার চিন্তাভাবনা আমাকে অনেকবারই নিজেকে বদলে নিতে সহযোগিতা করেছে। আমরা সবসময়ই তাকে মিস করবো, কিন্তু তার বলা শব্দগুলো সর্বত্র, সবসময় মেয়েদের পথ দেখাবে,’ লিখেছেন লেখক রিচা সিং। কমলা বিশ্বজুড়ে ছাপ ফেলা ‘ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং’ প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে এক দশক আগে এই প্রচারণা শুরু হয়েছিল। ২০০২ সালে কমলা ‘সঙ্গত’ নামের একটি ফেমিনিস্ট নেটওয়ার্ক তৈরি করেন। তিনি জাতিসংঘে কর্মরত থাকলেও পরে নেটওয়ার্কের কাজে বেশি সময় দেওয়ার আগ্রহে চাকরি ছেড়ে দেন। ২০১৭ সালে তিনি ‘লাডলি লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কারে’ ভূষিত হয়েছিলেন।