নন্দিত কথাসাহিত্যিক হ‌ুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হ‌ুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) বাংলাদেশের কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হ‌ুমায়ূন আহমেদের ৭৫তম জন্মবার্ষিকী। হ‌ুমায়ূন আহমেদের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জে। এই কথাশিল্পীর জন্মবার্ষিকীতে বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধসহ নানা প্রতিবেদন ছেপেছে পত্রিকাগুলো। পরিবারের পক্ষ থেকে উদ্‌যাপিত হবে লেখকের জন্মদিন। এ ছাড়া বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত হবে লেখককে নিবেদিত নাটকসহ নানা অনুষ্ঠানমালা। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। হ‌ুমায়ূন আহমেদ নেই কিন্তু তিনি বেঁচে আছেন লাখো পাঠকের হৃদয়ে।

হ‌ুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের জনপ্রিয়তম লেখক। উপন্যাসে নিজের প্রতিভার বিস্তার ঘটলেও তাঁর শুরুটা ছিলো কবিতায়। এরপর নাটক, শিশুসাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে শিল্প-সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি রেখে গেছেন নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর। হ‌ুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্যে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর জনকও বটে। ১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের পরপরই তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। উপন্যাস ও নাটকে তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলো বিশেষ করে ‘হিমু’, ‘মিসির আলী’, ‘শুভ্র’ তরুণ-তরুণীদের কাছে হয়ে ওঠে অনুকরণীয়। জনপ্রিয়তার জগতে তিনি একক ও অনন্য।

২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হ‌ুমায়ূন আহমেদের ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যান। সেখানে ২০১২ সালের জুলাই মাসের ১৬ তারিখে তাঁকে নেওয়া হয় লাইফসাপোর্টে। সে অবস্থাতেই ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে এগারোটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নিউইয়র্ক থেকে ২০১২ সালের ২৩ জুলাই দেশে ফিরিয়ে আনা হয় হ‌ুমায়ূন আহমেদকে। ২৪ জুলাই তাঁকে সমাহিত করা হয় তাঁর গড়ে তোলা নন্দনকানন নুহাশপল্লীর লিচুতলায়।

হ‌ুমায়ূন আহমেদের ডাকনাম কাজল। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা, আর মা ছিলেন গৃহিণী। তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। কথাসাহিত্যিক জাফর ইকবাল তাঁর ছোট ভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক।

হ‌ুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে আগুনের পরশমণি, শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা ও নয় নম্বর বিপদ সংকেত এবং ঘেটুপুত্র কমলা প্রভৃতি। বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পদক ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি  বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪) এবং বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন। দেশের বাইরেও তাঁকে নিয়ে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। এরই প্রমাণ জাপান টেলিভিশন ‘এনএইচকে’ তাঁকে নিয়ে নির্মাণ করেছে ১৫ মিনিটের তথ্যচিত্র ‘হু ইজ হু ইন এশিয়া’।