ধর্ষিতার চোখে জল, হাসপাতালে ভর্তি, তবুও রমনা থানা নেয় নি অভিযোগ!

ধর্ষিতার চোখে জল, হাসপাতালে ভর্তি, তবুও রমনা থানা নেয় নি অভিযোগ!

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : এ যেনো অপরাধীকে পোষা। কারণ একটু অর্থবিত্তের মালিক হলেই যেনো অপরাধ থেকে পার পেয়ে যাচ্ছেন যে কেউ। বিনিময়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ তো অহরহ। কিন্তু এ অবস্থা আর কতদিন ধরে চলতে দেওয়া যায়! কারণ সমাজে যে প্রচণ্ড পরিমাণে ঘুণে ধরেছে। ফলে যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে এর ভিত। এক্ষেত্রে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষিতা গত মঙ্গলবার (৪ জুলাই) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়েছেন। বর্তমানে ওই নারী ওসিসিতে ভর্তিও আছেন। তাঁর এ ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে রমনা থানায়। অথচ রমনা থানা পুলিশ বিষয়টি নথিভুক্তই করে নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগের ব্যাপারে জানার জন্য শুক্রবার (৭ জুলাই) বিকেলে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন দেওয়া হয়। তিনি প্রথমবার ফোন ধরেন নি। পরে ফোন ধরে ঘটনা সম্পর্কে জেনে আবার তা জিজ্ঞেস করেন। এরপর এ ঘটনা সম্পর্কে বলতে গেলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগটি নথিভুক্ত হয়েছে কি-না, তা আমার নলেজে নাই।’

রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরিফ রাব্বানী বাঙলার কাগজকে জানান, চিকিৎসার জন্য ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে।

ধর্ষণে অভিযুক্ত কাজী মামুনুর রশিদকে ফোন দেওয়া হলে প্রথমে নম্বর খোলা পাওয়া যায়, তবে তিনি ফোন ধরেন নি। এর কিছুক্ষণ পর তার বক্তব্য জানার জন্য আবারও ফোন দেওয়া হলে তার মুঠোফোনটিই বন্ধ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, পুরান ঢাকায় বাস করা এক নারীর স্বামী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ (প্যারালাইজড)। কিছুদিন আগে হাইকোর্ট মাজারে গিয়ে তিনি কান্নাকাটি করার সময় পঞ্চাশোর্ধ্ব কাজী মামুনুর রশিদ নামের এক ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে কান্নাকাটির কারণ জানতে চান। তখন পরিবারের অস্বচ্ছলতা এবং স্বামীর অসুস্থতার কথা জানান ওই নারী। এ সময় মামুনুর রশিদ তাঁকে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দেন এবং তখন তাঁর ফোন নম্বর নেন।

ওই নারীর স্বজনেরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেছেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে ওই ব্যক্তি ৪ জুলাই দুপুরে ফোনে ওই নারীকে সেগুনবাগিচার জিকে টাওয়ারের ৪র্থ তলায় ডেকে নেন। বিভিন্ন বিষয়ে জানার এক পর্যায়ে তাঁকে কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় জোরপূর্বক ওই নারীকে ধর্ষণ করেন মামুনুর রশিদ। বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকিও দেন তিনি। তখন ওই নারী সেখান থেকে বের হয়ে যান। আর তখন স্বজনদের ফোন করে বিষয়টি জানালে তাঁরা শিল্পকলা একাডেমির পাশের রাস্তা থেকে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।