দোহার পৌরসভায় ২২ বছর পর ভোট : উচ্ছ্বসিত ভোটারেরা।

দোহার পৌরসভায় ২২ বছর পর ভোট : উচ্ছ্বসিত ভোটারেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঙলা কাগজ; দোহার (নবাবগঞ্জ) : উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকার দোহার পৌরসভার নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (২৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলেই জানিয়েছেন প্রার্থীরা। পাশাপাশি তাঁরা দীর্ঘ ২২ বছর পর ভোট দিতে পেরে ছিলেন খুশি।

সরেজমিনে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিটি কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে পুরুষ ভোটারের পাশাপাশি নারী ভোটারদের উপস্থিতিও ছিলো চোখে পড়ার মতো। দীর্ঘদিন পর ভোট দিতে এসে খুশি ছিলেন প্রবীণ ভোটারেরা। 

এ ছাড়া প্রথমবারের মতো ভোট দিয়ে উৎফুল্ল ছিলেন তরুণ ভোটারেরাও।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ৪৩ হাজার ৬৬ জন। নির্বাচনে সঠিক ভোট পড়েছে ২৫ হাজার ৫১৭টি এবং বাতিল হয়েছে ৪৯টি ভোট। এতে ভোট পড়ার হার দাঁড়িয়েছে ৫৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

নির্বাচনে আলমাছ উদ্দিন (জগ) ৬ হাজার ৬৯৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুল (হেলমেট) পেয়েছেন ৫ হাজার ২৩ ভোট। 

এ ছাড়া কাউন্সিলর হিসেবে ১ নম্বর ওয়ার্ডে আলমগীর মুবিন চৌধুরী (টেবিল ল্যাম্প), ২ নম্বর ওয়ার্ডে শওকত হোসেন (উটপাখি), ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আব্দুস সালাম শুকুর (টেবিল ল্যাম্প), ৪ নম্বর ওয়ার্ডে পাপেল মাহমুদ নিজাম (ব্রিজ), ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়াসিম চোকদার (পানির বোতল), ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মো. হুমায়ুন কবির (ডালিম), ৭ নম্বর ওয়ার্ডে উদয় হোসাইন (উটপাখি), ৮ নম্বর ওয়ার্ডে জাফর ইকবাল জাহিদ বেপারী (ব্ল্যাকবোর্ড) এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মোহাম্মদ মোরাদ (ডালিম) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

এ ছাড়া সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড-১ এ ইসরাত জাহান বনানী (চশমা), সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড-২ এ স্মৃতি আক্তার (জবা ফুল) এবং সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড-৩ এ ফরিদা ইয়াছমিন (আনারস) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচনি এলাকায় ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিলো। 

যেখানে একাধিক ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি ছিলেন পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার ও সাদা পোশাকে আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

জানতে চাইলে দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার লক্ষ্যে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কাজ করেছে।’  

আইনি জটিলতা কাটিয়ে দীর্ঘ ২২ বছর পর নির্বাচন হওয়ায় এবং শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পেরে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পৌরবাসী। 

এবার নির্বাচনে পৌরসভার ২১টি কেন্দ্রের ১৩৪টি ভোটকক্ষে ২০১টি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬১ এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে গঠিত হয় দোহার পৌরসভা। যেখানে ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রথম নির্বাচন। এরপর সীমানা জটিলতাসহ নানা কারণে আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নি প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভায়।