তাকসিমের বাড়ি সংক্রান্ত অভিযোগের আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধানে দুদক

তাকসিমের বাড়ি সংক্রান্ত অভিযোগের আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধানে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিলাসবহুল বাড়ি, ১৪টি গাড়ি ক্রয়সহ মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন)।

৯ জানুয়ারি বাঙলার কাগজ, আওয়ার ডন এবং সমকালে তাকসিমের ১৪টি বাড়ি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার দিনেই তা নিয়ে তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে দুদককে জানানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

ওই আদেশের পর দুদক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ সেলের পরিচালক উত্তম কুমার মণ্ডলের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

আদেশ অনুযায়ী, মানি লন্ডারিং-সংক্রান্ত অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য দুদকের মহাপরিচালকের (তদন্ত-১) কাছে পাঠানো হয়েছে।  

অফিস আদেশে বলা হয়, তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে গত ১৩ বছরে বিদেশি ঋণে করা বড় বড় প্রকল্প থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে তা হুন্ডিসহ বিভিন্নভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের অভিযোগ এসেছে। তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন শহরে ১৪টি বিলাসবহুল বাড়ি ক্রয় করেছেন বলেও অভিযোগ এসেছে।

গত সোমবার ‘ওয়াসার তাকসিমের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি!’ শিরোনামে বাঙলার কাগজ, আওয়ার ডন এবং সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি কেনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) যে দুটি অভিযোগ ছিলো, তা সংস্থাটি যাচাই-বাছাই করে দেখতে পারে বলে ওই দিনই মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।

ওয়াসার এমডির বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘একটি-দুটি নয়, ১৪ বাড়ি! দেশে নয়, সুদূর যুক্তরাষ্ট্রে। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে কিনেছেন এসব বাড়ি। সব বাড়ির দাম টাকার অঙ্কে হাজার কোটি ছাড়াবে। দেশ থেকে অর্থ পাচার করে তিনি এসব বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাড়ি কেনার অর্থের উৎস ও লেনদেন প্রক্রিয়ার তত্ত্ব তালাশে নেমেছে ইন্টারপোলসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। বিপুল পরিমাণ অর্থে একের পর এক বাড়ি কেনার ঘটনায় দেশটির গোয়েন্দা তালিকায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাকসিমের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তাকসিম এ খান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর পরিবারের মাত্র একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। সেখানে ১৪টি বাড়ি থাকার যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তার কোনও সত্যতা নেই।  তিনি বলেছেন, ‘শুধু একটি ফ্ল্যাট রয়েছে, সেটি আমার স্ত্রীর কেনা। এর বাইরে কোনও বাড়ি নেই।’

এক যুগেরও বেশি সময় ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে আছেন তাকসিম এ খান। তাঁর পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য তিনি প্রায় প্রতি বছরই একটি নির্দিষ্ট সময় সেখানে থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেও তাঁর ওয়াসার এমডির দায়িত্ব পালনের ইতিহাস রয়েছে। তবে গত বছর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে ওয়াসার দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাওয়ার আবেদন করলে তা অনুমোদন করে নি ঢাকা ওয়াসা বোর্ড।