ঢাকায় ওসির বিপুল সম্পদ : রিটকারীকে দুদকে আবেদন দিতে বললেন হাইকোর্ট।

ঢাকায় ওসির বিপুল সম্পদ : রিটকারীকে দুদকে আবেদন দিতে বললেন হাইকোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামের বাড়ি-প্লটসহ বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ বিষয়ে রিটকারীকে দুদককে আবেদন দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (১০ আগস্ট) রিট আবেদনকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হকের উদ্দেশে এ কথা বলেন।

আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আইনের বিধান বাস্তবায়ন করেন। বিধান হলো, অভিযোগ দুদককে জানাতে হবে। দুদকে আবেদন দিয়ে আসেন। দুদক পদক্ষেপ না নিলে, চাইলে আবেদন নিয়ে আসতে পারেন।’

এরপর আদালত রিটের শুনানি ২১ আগস্ট পর্যন্ত স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) করেন। 

‘ঢাকায় ওসির আটতলা বাড়িসহ বিপুল সম্পদ’ শিরোনামে ৫ আগস্ট প্রথম সারির দৈনিকে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।

প্রতিবেদনটি যুক্ত করে ওসি মনিরুলের বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে বুধবার রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানিতে অংশ নেন। দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন ও ওসির পক্ষে আইনজীবী মাহবুব শফিক শুনানিতে ছিলেন।

রিটে ওসি মনিরুলের বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ তদন্তের জন্য দুদকের প্রতি নির্দেশনা দেওয়ার আরজি জানানো হয়েছে। ওই গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় আটতলা বাড়ি করেছেন। বানাচ্ছেন আরেকটি ডুপ্লেক্স বাড়ি।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জে তাঁর রয়েছে চারটি প্লট। বাড়ি, প্লটসহ এই বিপুল সম্পদের মালিক ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম। রাজধানীর মোহাম্মদপুর হাউজিং সোসাইটিতে এক মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

সরকারি একটি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে ওই গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে ওসি মনিরুলের এসব অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে পুলিশ সূত্র বলছে, যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তাঁর সম্পদের পরিমাণ এর চেয়ে অনেক বেশি।

পুলিশের একজন পরিদর্শক হয়ে ওসি মনিরুল কীভাবে এতো সম্পদের মালিক হয়েছেন, তা নিয়ে পুলিশ বিভাগে আলোচনা চলছে। বর্তমানে তিনি নবম গ্রেডে ২২ হাজার টাকা স্কেলে সাকুল্যে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বেতন পান। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি এই সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ধারণা করছেন।

জানা গেছে, ১৯৯২ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন মনিরুল ইসলাম। তখন এই পদটি ছিলো তৃতীয় শ্রেণির পদ। ২০১২ সালে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ পরিদর্শক হন তিনি। প্রায় ৩০ বছরের চাকরিজীবনে বেশিরভাগ সময় ঢাকা রেঞ্জে ছিলেন। তাঁর বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায়।