ঘুরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে জেতালেন আফিফ-মিরাজ।

ঘুরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে জেতালেন আফিফ-মিরাজ।
ডন প্রতিবেদন : (সংক্ষিপ্ত স্কোর : বাংলাদেশ : ৪৮.৪ ওভারে ২১৯/৬, আফগানিস্তান: ২১৬। ফলাফল : বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী) ২১৬ রান তাড়ায় ৪৫ রানেই নেই ৬ উইকেট। অতি আশাবাদীও বাংলাদেশের পক্ষে বাজি ধরার কথা না। আফিফ হোসেন-মেহেদী হাসান মিরাজ ভেবেছিলেন ভিন্ন। নিজেদের সামর্থ্যে আস্থা রেখে অবিচ্ছিন্ন ১৭৪ রানের রেকর্ড জুটিতে অবিশ্বাস্য এক ম্যাচ জিতিয়েছেন তাঁরা। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দলকে জিতিয়ে ১১৪ বলে ৮৯ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ। ১২০ বলে ৮১ করেন মিরাজ। সংক্ষিপ্ত স্কোর : বাংলাদেশ : ৪৮.৪ ওভারে ২১৯/৬ (তামিম ৮, লিটন ১, সাকিব ১০, মুশফিক ৩, ইয়াসির ০, মাহমুদউল্লাহ ৮, আফিফ ৯৩* , মিরাজ ৮১* ; ফারুকি ৪/৫৪ , মুজিব ১/৩২ , ইয়ামিন ০/৩৫, রশিদ ১/৩০, নবি ০/৩২, নাইব ০/২১) আফগানিস্তান : ৪৯.১ ওভারে ২১৫ (গুরবাজ ৭, জাদরান ১৯, রহমত ৩৪, হাসমতুল্লাহ ২৮, নাজিবুল্লাহ ৬৭ , নবি ২০, নাইব ১৭, রশিদ ০, মুজিব ০, ইয়ামিন ৫, ফারুকি ০* ; মুস্তাফিজ ৩/৩৫, তাসকিন ২/৫৫, সাকিব ২/৫০, শরিফুল ২/৩৮, মিরাজ ০/২৮, মাহমুদউল্লাহ ১/৪) ফল : বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা : মেহেদী হাসান মিরাজ। সপ্তম উইকেটে রেকর্ড জুটি : দলের চরম বিপর্যয়ে দুর্দান্ত এক জুটিতে রেকর্ডও গড়েছেন আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের জুটির রান পেরিয়ে গেছে ১৪০। ওয়ানডেতে সপ্তম উইকেটে তাদের এই জুটিই এখন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। তাঁরা পেছনে ফেলেছেন ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের জুটিতে। ২০১৮ সালে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সপ্তম উইকেটে ১২৭ রানের জুটি গড়েছিলেন ইমরুল-সাইফুদ্দিন। রেকর্ড জুটির পথে বাংলাদেশকে জেতার অনেক কাছে নিয়ে গেছেন আফিফ-মিরাজ আফিফ-মিরাজের শতরানের জুটি, ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ : ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারানোর চরম বিপর্যস্ত পরিস্থিতি থেকে হাল ধরে দলকে টানছেন আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। সপ্তম উইকেটে দুজন গড়েছেন শতরানের জুটি। ১৪৩ বলে তাঁরা স্পর্শ করেন জুটির সেঞ্চুরি। তাদের এমন লড়াইয়ে চরম বিপর্যস্ত পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। আফিফের পর ফিফটি তুলে নিয়েছেন মিরাজও। ধীরে ধীরে ম্যাচ জেতার কাছে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অবশ্যই এই দুজনের পরে নেই আর কোন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান। আরও একটি উইকেট পড়লে তৈরি হতে পারে বিপদ। দলের বিপর্যয়ে আফিফের ফিফটি : তিনি যখন ব্যাট করতে নামেন দলের তখন স্কোর ৫ উইকেটে ২৮। খানিক পর সেটা হয়ে গেল ৬ উইকেটে ৪৫। এমন কঠিন পরিস্থিতি থেকে সাবলীল ব্যাটিং লড়াই চালানেন আফিফ হোসেন। মেহেদী হাসান মিরাজকে গড়লেন জুটি। জুটি আছে শতরানের পথে। এরমধ্যে ৬৪ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নিয়েছেন আফিফ। চরম বিপর্যয়ে আফিফ-মিরাজের প্রতিরোধ : ২৮ রানে পড়েছিল ৫ উইকেত, ৬ষ্ঠ উইকেট পড়ল ৪৫ রানেই। দলের এমন চরম বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে হাল ধরেছেন আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। কেবল ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে না থেকে রানও বাড়াচ্ছেন তাঁরা। সপ্তম উইকেট জুটিতে ৫০ রান এসেছে ৫৮ বলে। বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আশা বাড়াচ্ছেন তাঁরা। রশিদ এসেই তুলে নিলেন মাহমুদউল্লাহকে : অনেকবারই বিপদে দলের হাল ধরার নজির আছে মাহমুদউল্লাহর। এবার হতাশ করলেন তিনি। ২৮ রানে ৫ উইকেট পড়া পরিস্থিতি থেকে তাঁর দিকেই তাকিয়ে ছিল সমর্থকরা। কিন্তু রশিদ খান আক্রমণে আসতেই বিদায় নিলেন তিনি। রশিদের বলে কাট করতে গিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন ১৭ বলে ৮ রান কর মাহমুদউল্লাহ। ২১৬ রান তাড়ায় ৪৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে তামিম ইকবালের দল। দলকে মহাবিপদে ফেলে বাজে শটে আউট সাকিব : জায়গায় দাঁড়িয়ে মুজিব উর রহমানের অফ স্টাম্পের বাইরের বল কাট করতে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। আড়াআড়ি করে পেতে দেওয়া ব্যাটের নিচের কানায় লেগে মাটিতে খেয়ে ড্রপ বল লাগল উইকেটে। দৃষ্টিকটু এই শটে ১৫ বলে ১০ রানে থামল তাঁর ইনিংস। ভীষণ চাপের মুখে যার দিকে তাকিয়েছিল বাংলাদেশ, সেই সাকিবের বিদায়ে বিপদ ধারণ করল পাহাড়সম মূর্তি। তিনি হতে পারলেন না দলের ত্রাতা। ফলে ২৮ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে ধুঁকছে স্বাগতিকরা। আফগানিস্তানের দেওয়া ২১৬ রানের সাদামাটা লক্ষ্যটা ক্রমেই হয়ে উঠছে দূর আকাশের তারা। উড়ে গেলো অভিষিক্ত ইয়াসিরের স্টাম্প : ১৮ রানে ৩ উইকেট হারানো পরিস্থিতিতে নেমেছিলেন। দলের সেই চরম বিপদে নিজের প্রথম ওয়ানডে ইনিংসটা রাঙানো হলো না ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বির। ফজল হক ফারুকির বলে ভেঙ্গে গেলো তাঁর স্টাম্প। ৫ বলে ০ রানে বিদায় ইয়াসিরের। ১৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কাঁপছে বাংলাদেশ। ওপেনারদের পর ফিরে গেলেন মুশফিকও : আগের ওভারে ফজল হক ফারুকির শিকার হয়ে ফিরে গিয়েছিলেন দুই ওপেনার। ফারুকি তাঁর পরের ওভারে শিকার ধরলেন মুশফিকুর রহিমকেও। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলটিও ভেতরে ঢুকিয়েছিলেন বাঁহাতি পেসার ফারুকি। সামনের পায়ে খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন মুশফিক। এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দিয়ে আউট দেন আম্পায়ার গাজী সোহেল। মুশফিক দ্রুতই নেন রিভিউ। কিন্তু লাভ হয়নি। উলটো রিভিউ হারায় বাংলাদেশ। ৫ বলে ৩ রান করে ফেরেন মুশফিক। ১৮ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে বাংলাদেশ দল। শুরুতেই তামিম-লিটনের বিদায় : তিন চারে প্রথম ওভারেই এসে গিয়েছিল ১২ রান। দ্বিতীয় ওভার শান্ত থাকার পর তৃতীয় ওভারে পড়ল ২ উইকেট। প্রথম ওভারে সাদামাটা থাকা বাঁহাতি পেসার ফজল হক ফারুকি ভেতরে ঢোকা দারুণ এক বলে পরাস্ত করেন লিটন দাসকে। আম্পায়ার কট বিহাইন্ডের আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নিয়ে সফল হয় আফগানিস্তান। এক বল পরই আরও একটি সফল রিভিউয়ে বিদায় তামিম ইকবালের। অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকা বলে পা লাগিয়ে দেন তামিম। আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নিয়ে তাকেও ফেরায় আফগানরা। ২১৬ রান তাড়ায় ১৪ রানে ২ উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা নাজিবুল্লাহর ফিফটিতে আফগানিস্তানের ২১৫ : শুরুতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া আফগানিস্তান ডানা মেলার আগেই বারবার খেল ধাক্কা। পাঁচে নেমে তাদের ইনিংসে লড়াইয়ের কিছুটা অক্সিজেন যোগান নাজিবুল্লাহ জাদরান। তাঁর ফিফটিতেই দুইশো ছাড়ানো পুঁজি পায় সফরকারীরা। শেষ ১০ ওভারে পর্যাপ্ত রান আনতে পারে নি তাঁরা। এই সময়ে ৫ উইকেট হারিয়ে হাসমতুল্লাহ শহিদির দল তুলে কেবল ৪৭ রান। শেষের ঝড়ের চেষ্টায় বিদায় নাজিবুল্লাহর : দলের বিপদে ইনিংস টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। দলকে দুইশো পার করে থেমেছে তাঁর দৌড়। ৪৯তম ওভারে শরিফুল ইসলামের বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৮৪ বলে ৬৭ করেছেন এই বাঁহাতি। মুস্তাফিজের কাটারে কাটা মুজিব : মুস্তাফিজুর রহমানের কাটার একদম টের পেলেন না মুজিব-উর রহমান। তাঁর সহজ ক্যাচ উঠলো মিড অফে। ১৯৫ রানে ৮ উইকেট হারাল আফগানিস্তান খরুচে বোলিংয়ের পর সাকিবের জোড়া উইকেট : শুরু থেকে বোলিং তেমন জুতসই হচ্ছিল না সাকিব আল হাসানের। লাইন-লেন্থে গড়বড়ে অনেক রান বেরিয়ে যাচ্ছিলো তাঁর বল থেকে। শেষ স্পেলে এসে অবশেষে উইকেটের দেখা পেলেন সাকিব। সাকিবের আর্ম ডেলিভারিতে বিভ্রান্ত হয়ে এলবিডব্লিউতে কাটা পড়েন ২০ বলে ১৭ রান করা গুলবদিন নাইব। দুই বল পরই সাকিব পান আরেক উইকেট। মাত্র ৩ বল খেলে সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে যান রশিদ খান। ১৯৪ রানে সপ্তম উইকেট হারায় আফগানিস্তান। নাজিবুল্লাহর ফিফটি : দলের চাপের সময়ে নেমেছিলেন, হাসমতুল্লাহ শহিদির সঙ্গে গড়েন প্রথম প্রতিরোধ। শহিদির বিদায়ের পর মোহাম্মদ নবিকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ জুটিতে দলকে রাখেন খেলায়। আফগানিস্তানের বাঁহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটার ৭০ বলে স্পর্শ করলেন ফিফটি নবিকে আউট করে তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার : শেষের ঝড়ের জন্য পরিস্থিতি ছিল আদর্শ। মোহাম্মদ নবি থিতু হয়ে সে আভাসই দিচ্ছিলেন। একদম প্রয়োজনীয় মুহুর্তেই আঘাত হানলেন তাসকিন আহমেদ। তাঁর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিলেন ২৪ বলে ২০ রান করা নবি। ১৬৫ রানে পঞ্চম উইকেট হারালো আফগানরা। এতে ভাঙল পঞ্চম উইকেটে ৬৩ বলে ৬৩ রানের জুটি। লড়াইয়ের পুঁজি পাওয়ার চেষ্টায় আফগানিস্তান : শুরুতে উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে সামান্য প্রতিরোধ। এরপর মন্থর রানের চাকায় এগুতে থাকে আফগানিস্তান। ১০২ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর নাজিবুল্লাহ জাদরান আর মোহাম্মদ নবি মিলে টানছেন দলকে। চেষ্টায় আছেন লড়াইয়ের পুঁজি পাওয়ার। ৩৫ ওভার শেষে আফগানিস্তানের স্কোর ৪ উইকেটে ১৪০। আফগান অধিনায়ককে ফেরালেন মাহমুদউল্লাহ : ক্রিজে দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান দেখে মেহেদী হাসান মিরাজের পাশাপাশি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। মাহমুদউল্লাহ এনে দিয়েছেন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ক্রিজে এসে শুরুতে সময় নিলেও পরে বিপদজনক হওয়ার দিকে ছিলেন আফগান অধিনায়ক হাসমমতুল্লাহ শহিদি। ৪৩ বলে ২৮ করা এই ব্যাটসম্যান কাট করতে গিয়ে ধরা দেন মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। ২৮তম ওভারে ১০২ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। রহমতকে ছাঁটলেন তাসকিন : তিন নম্বরে নেমে সময় নিয়ে থিতু হয়েছিলেন রহমত শাহ। কিন্তু থিতু হয়েও বড় করতে পারলেন না ইনিংস। বলে-রানের ব্যবধানটাও রয়ে গেল বড়। তাসকিন আহমেদের বাড়তি বাউন্সে পরাস্ত হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৩৪ করা রহমত। এই রান করতে ৬৯ বল লেগে যায় তাঁর। আফগানদের মন্থর রানের গতি : ইব্রাহিম জাদরান আউট হওয়ার পর রানের গতি ভীষণ মন্থর হয়ে পড়ে আফগানিস্তানের। ১৫ ওভারের পর টানা ১৭ বল থেকে আসেনি কোন রান। সতর্ক ব্যাট করে থিতু হওয়ার পথে রহমত শাহ। ক্রিজে এসে মন্থর হাসমতুল্লাহ শহিদিও। জাদরানকে ফেরালেন শরিফুল : মাত্র ৩ রানেই আউট হতে পারতেন ইব্রাহিম জাদরান। তাসকিন আহমেদের বলে তাঁর ক্যাচ ফেলে দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। জীবন পেয়ে থিতু হলেও বেশি দূর যেতে পারলেন না এই ডানহাতি। ২৩ বলে ১৯ রান করে শরিফুল ইসলামের অ্যাঙ্গেলে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট লাগিয়ে স্লিপে ধরা দেন এই ডানহাতি। ১৪তম ওভারে বাংলাদেশ পেল দ্বিতীয় উইকেট। ৪৫ রানের জুটি ভাঙল আফগানদের। ৫৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারাল সফরকারীরা। শুরুর ধাক্কার পর আফগানদের প্রতিরোধ : ১১ রানেই রাহমানুল্লাহ গুরবাজকে হারিয়ে ফেলেছিল আফগানিস্তান। এরপর কিছুটা সতর্ক পথে হাঁটতে শুরু করেন তাঁরা। ইব্রাহিম জাদরান-রহমাত শাহ মিলে গড়েন প্রতিরোধ। তাসকিন আহমেদের বলে ৩ রানে থাকা জাদরান দিয়েছিলেন সহজ ক্যাচ। ডিপ স্কয়ার লেগে তা রাখতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাসকিনের পরের ওভার থেকে ১৫ রান নিয়ে নেয় আফগানরা। প্রথম ১০ ওভার শেষে ৪১ রান তুলে তাঁরা। প্রথম পাওয়ার প্লের পর ১৩তম ওভারে আফগানিস্তান স্পর্শ করেন পঞ্চাশ। জাদরানকে জীবন দিলেন মাহমুদউল্লাহ : ৬ষ্ঠ ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে পুল করতে গিয়ে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন ইব্রাহিম জাদরান। ৩ রানে থাকা এই ডানহাতির সহজ ক্যাচ ডিপ স্কয়ার লেগে ছেড়ে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ক্যাচটি নিতে পারলে ১৮ রানে ২ উইকেট হারাত আফগানরা। মুস্তাফিজের বলে কাবু গুরবাজ : মুস্তাফিজুর রহমানকে প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি মেরেছিলেন রাহমানুল্লাহ গুরবাজ। আগ্রাসী শুরুর একটা চেষ্টায় ছিলেন তিনি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই তাঁর পতন। মুস্তাফিজের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলটি ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন। টাইমিং না হওয়ায় বল উঠল আকাশে। মিড অনে একটু সরে গিয়ে সহজেই তা হাতে জমান অধিনায়ক তামিম ইকবাল।। ১১ রানে প্রথম উইকেট হারালো আফগানিস্তান টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, ইয়াসিরের অভিষেক : আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে টস ভাগ্য পক্ষে আসেনি বাংলাদেশের। টস জিতে সফরকারীরা আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে এই ম্যাচে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বির। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডের বাইশ গজকে দুই অধিনায়কই বলছেন- রান বান্ধব। আগে ব্যাট করে তাই চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেতে যায় আফগানরা। টস জিতলে বাংলাদেশও আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিতো বলে জানান অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে আফগানদের নাগালের মধ্যে আটকে রান তাড়া করতে পুরো আত্মবিশ্বাসী বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, উইকেট পরের দিকেও থাকবে বেশ ভালো। আফগানদের হারাতে একাদশে তিন পেসারের সঙ্গে দুই বিশেষজ্ঞ স্পিনার রেখেছে স্বাগতিকরা। আফগানিস্তান স্পিন শক্তিতেই বলিয়ান। রশিদ খান, মুজিব-উর-রহমান, মোহাম্মদ নবি- এই তিন স্পিনারের সঙ্গে আছেন দুই পেসার ইয়ামিন আহমেদজাই ও ফজল হক ফারুকি। রঙিন পোশাকেও ইয়াসিরের অপেক্ষার অবসান : ২০১৯ সালে আয়রল্যান্ড সফরে জাতীয় দলের সেটআপে এসেছিলেন ইয়াসির আলি। এরপর সব সংস্করণের স্কোয়াডে একাধিকবার থাকলেও অভিষেক হচ্ছিলো না তাঁর। গত নভেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজ শহর চট্টগ্রামে টেস্ট ক্যাপ পান ইয়াসির। অভিষেকে আলোও ছড়ান। এবার সেই চট্টগ্রামে মিলল ওয়ানডের জার্সিও। দেশের ১৩৪তম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে ইয়াসিরের। বাংলাদেশ একাদশ : তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান। আফগানিস্তান একাদশ : রাহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, হাসমতুল্লাহ শহিদি, নাজিবুল্লাহ জাদরান, গুলবাদিন নাইব, মোহাম্মদ নবি, রশিদ খান, মুজিব-উর রহমান, ইয়ামিন আহমেদজাই, ফজল হক ফারুকি। চেনা কন্ডিশন, প্রিয় সংস্করণে সাত মাস পর পুরো শক্তির বাংলাদেশ : অধিনায়ক তামিম ইকবাল স্পষ্ট করেই বললেন, ফরম্যাটটা আমাদের সবচেয়ে প্রিয়। তাঁর না বললেও অবশ্য চলছে। ওয়ানডেতেই বাংলাদেশের সাফল্যের পাল্লা যে ভারি। চলমান ওয়ানডে সুপার লিগেও বাংলাদেশের অবস্থান বেশ শক্তপোক্ত। ১২ ম্যাচে ৮০ পয়েন্ট নিয়ে ইংল্যান্ডের পরই লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা । যদিও সুপার লিগে অনেকের অনেক খেলাই বাকি, এই হয়ত ছবি বদলাবে। তবে সুপার লিগ শেষেও বাংলাদেশের একটা ভালো অবস্থানে থাকার পথে। প্রিয় সংস্করণে ঘরের মাঠে আফগিস্তানের বিপক্ষে পুরো শক্তির দলই পাচ্ছে স্বাগতিকরা। দুই সিরিজ পর চার সিনিয়র তারকাদের সবাই আছেন। আছেন সম্ভাব্য সেরা পারফর্মাররাও। প্রতিপক্ষ নিয়ে উদ্বেগ নেই আফগানিস্তানের : আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেক পরে এসেও বাংলাদেশকে কম অস্বস্তি দেয়নি আফগানিস্তান। তাদের দারণ স্কিলফুল স্পিনাররা বারবারই ভোগান্তির কারণ হয়েছেন বাংলাদেশের জন্য। ওয়ানডে সংস্করণে বাংলাদেশ অনেক শক্তিশালী হলেও প্রতিপক্ষের জন্য পরিকল্পনা আছে, উদ্বেগ নেই রশিদ খানদের। অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শহিদি জানালেন সে কথাই, আমি আসলেই আমাদের শক্তি, আমাদের খেলোয়াড়দের নিয়ে চিন্তা করি। প্রতিটি বিভাগ বিবেচনা করে আমাদের একটি ভালো দল আছে। আমি তাদের সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী। আশা করছি, আমরা আমাদের সেরাটা দেবো। সত্যি বলতে, আমরা পুরো দল নিয়েই ভাবি। আমরা তাদের সম্পর্কে কী পরিকল্পনা করেছি তা আমাদের পরিকল্পনার ভিতরেই আছে। আমরা প্রত্যেকের জন্য পরিকল্পনা করেছি, আমরা তাদের শক্তি এবং দুর্বলতা জানি।