গায়ক আকবর আর নেই

গায়ক আকবর আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : রিকশাচালক থেকে গায়ক হওয়া আকবর রোববার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে মারা গেছেন। হাসপাতালের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুর ১৩ নম্বর এলাকার বাসায়। বাদ এশা মিরপুর ১৩ নম্বর কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ নিয়ে স্ত্রী-কন্যাসহ আত্মীয়স্বজনের রওনা করার কথা যশোরের উদ্দেশে। শেষবার মায়ের কাছে ‘ফিরে’ যাবেন আকবর। যশোর শহরে দ্বিতীয় জানাজা শেষে সেখানকার কারবালা কবরস্থানে আকবরের মায়ের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হবে বলে জানান স্ত্রী কানিজ ফাতেমা।

১০ বছর ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন আকবর। পাঁচ বছর হলো তাঁর শরীরে বাসা বাঁধে জন্ডিস, রক্তে প্রদাহসহ নানা রোগ। তাই আগের মতো মঞ্চে গাইতেও পারতেন না। গত জানুয়ারি থেকে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। আকবরের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় শরীরে পানি জমে তাঁর ডান পা নষ্ট হয়ে যায়। গত অক্টোবরে সেই পা কেটে ফেলা হয়। পা কাটার পর বেড়ে যায় তাঁর কিডনি ও লিভারের সমস্যা। এজন্য আকবরকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথাও ছিলো। গত বুধবার ভিসাও পেয়েছিলেন। কিন্তু তখন আকবরকে নিয়ে ভারতে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিলো না। রোববার বেলা ৩টায় ৫৪ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

২০০৩ সালে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে কিশোর কুমারের গাওয়া ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে’ নতুন করে গেয়ে যশোরের রিকশাচালক আকবর সবার কাছে গায়ক আকবর হিসেবে পরিচিতি পান। এই গানের পর ‘ইত্যাদি’তে ‘তোমার হাতপাখার বাতাসে’ গানটি দেশ-বিদেশের দর্শক-শ্রোতার কাছে তাঁকে আরও বেশি পরিচিত এনে দেয়। ১৯ বছর ধরে এভাবেই গাইছিলেন। একটা সময় টের পান, শরীরে বাসা বেঁধেছে নানান রোগ। কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েক দফায় দেশে ও দেশের বাইরে চিকিৎসা নেন আকবর।

খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের এক ব্যক্তি আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হন। তিনি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ‘ইত্যাদি’ কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছর ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে’ গানটি নতুন সংগীতায়োজনে গেয়ে সবাইকে অবাক করে দেন আকবর।