কুমিল্লায় কাউন্সিলর হত্যার প্রধান আসামি শাহ আলম বন্দুকযুদ্ধে নিহত।

কুমিল্লায় কাউন্সিলর হত্যার প্রধান আসামি শাহ আলম বন্দুকযুদ্ধে নিহত।
ডন প্রতিবেদক, কুমিল্লা : কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল ও তাঁর সহযোগী হরিপদ সাহা হত্যা মামলার প্রধান আসামি শাহ আলম পুলিশেরসঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। বুধবার (পহেলা ডিসেম্বর) রাত দেড়টার দিকে শহরের চাঁনপুর রত্নাবতী গোমতি বেড়িবাঁধে গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে বলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল আজিম জানিয়েছেন। শাহ আলম (২৮) সুজানগর বউ বাজার এলাকার মৃত জানু মিয়ার ছেলে। সোহেল ও হরিপদকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামির তালিকায় তাঁর নাম ছিলো ১ নম্বরে। ওই মামলার বাদী সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমনের দাবি করেন, গুলিবিদ্ধ হরিপদ সাহাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি শাহ আলমকে ‘চিনতে পারার কথা’ বলে গেছেন। মাদক চোরাকারবারসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও মামলা রয়েছে শাহ আলমের নামে। এর আগে এ মামলার আসামি সাব্বির হোসেন (২৮) ও সাজন (৩২) গত ২৯ নভেম্বর রাতে শহরের সংরাইশ এলাকায় পুলিশেরসঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। বুধবার রাতের ঘটনার বিবরণে ওসি আনোয়ারুল আজিম বলেন, কয়েকজন অস্ত্রধারী গোমতী বেড়িবাঁধে অবস্থান করছে খবর পেয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল রাতে সেখানে অভিযানে যায়। ‘পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পালটা গুলি চালায়। দুই পক্ষের গোলাগুলিতে একজন সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়।’ ‘পরে স্থানীয়রা তাকে শাহ আলম বলে শনাক্ত করেন। গুলিবিদ্ধ শাহ আলমকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’ গোয়েন্দা পুলিশের এসআই পরিমল দাস বলছেন, এ অভিযানে পুলিশের দুজন সদস্যও আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার রাতের গোলাগুলির ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে বলেই জানান ওসি। গত ২২ নভেম্বর বিকেলে কুমিল্লা শহরের পাথুরিয়াপাড়ায় ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেলের সিমেন্টের দোকান থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে হামলা চালায় একদল মুখোশধারী। সেখানে থাকা সোহেল এবং তার সহযোগী ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সভাপতি হরিপদ সাহাকে তাঁরা গুলি করে পালিয়ে যায়। খুনিদের এলোপাতাড়ি গুলিতে আহত হন আরও চারজন। পরে সোহেল ও হরিপদ সাহা নিহত হন। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল ২০১২ ও ২০১৭ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি প্যানেল মেয়র ছিলেন। পরদিন সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১১ জনের নাম উল্লেখ করে সেখানে অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়। বাদী রুমন সেদিন বাংলা কাগজ এবং ডনকে বলেছিলেন, ‘মাদকবিরোধী অবস্থান নেওয়ায় এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। এজাহারে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।’ ওই মামলার এজাহারে নাম থাকা পাঁচজনসহ মোট সাতজনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র‌্যাব। প্রধান আসামিসহ তিনজন পুলিশেরসঙ্গে ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। এজহারের ২ নম্বর আসামি সোহেল ওরফে জেল সোহেল, ১০ নম্বর আসামি সায়মন এবং ১১ নম্বর আসামি রনিকে পুলিশ এখনো ধরতে পারে নি। তবে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেই জানিয়েছেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ।