কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বঙ্গভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা শুরু

কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বঙ্গভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বঙ্গভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা শুরু হয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা গণপদযাত্রা করে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেবেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও গণপদযাত্রা শুরু করেছেন।

আজ রবিবার (১৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর ব্যানারে এই গণপদযাত্রা শুরু হয়।

গণপদযাত্রার জন্য বেলা ১১টার আগে থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে বড় কিছু মিছিলও আসে।

গণপদযাত্রার উদ্দেশ্যে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর মিছিল শুরু হয় দুপুর ১২টা ২ মিনিটে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শাহবাগ ও মৎস্য ভবন হয়ে বঙ্গভবনের দিকে যাবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

গণপদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন।

শনিবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, গণপদযাত্রা করে বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কথা শিক্ষার্থীদের।

ঢাকায় এই কর্মসূচির পাশাপাশি সারাদেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরাবর গণপদযাত্রা করবেন। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তাঁরা রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেবেন।

গণপদযাত্রায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দিতে বঙ্গভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা শুরু করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গভবন অভিমুখে শিক্ষার্থীদের এই পদযাত্রা শুরু হয়।

গণপদযাত্রায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, শুরুতে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে যাবেন। সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী আর চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গভবনে গিয়ে স্মারকলিপি দেবেন তাঁরা।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জবি’ ব্যানারে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে পার্শ্ববর্তী কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন।

বেলা সাড়ে ১১টার পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই গণপদযাত্রা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে পৌঁছায়। ক্যাম্পাস থেকে রায়সাহেব বাজার, তাঁতি বাজার, ফুলবাড়িয়া, গুলিস্তান, নগর ভবন হয়ে টিএসসিতে আসেন তাঁরা।

দাবি আদায়ে মাঠের কর্মসূচির সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ডাকে আজ টানা ষষ্ঠ দিনের মতো চলছে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট।

অন্য দিনগুলোয় আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি ঘিরে ছাত্রলীগ মধুর ক্যানটিনে জমায়েত হলেও আজ সেখানে কোনও জমায়েত ছিলো না।

তবে শনিবার (১৩ জুলাই) রাতে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচারপত্র বিতরণ করেন। তাঁরাও কোটার বিষয়টির যৌক্তিক সমাধান চান উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের পরিবেশ ভালো রাখার অনুরোধ করেছেন। হলগুলোয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমও বিতরণ করেছে ছাত্রলীগ।

পহেলা জুলাই থেকে টানা আন্দোলনে আছেন কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানানো শিক্ষার্থীরা। ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলন শুরু হয়েছিলো। কিন্তু গত ৭ জুলাই থেকে তাঁরা এক দফা দাবির কথা বলছেন। দাবিটি হচ্ছে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করা।