ওবায়দুল কাদের : বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার অপপ্রয়াস মাত্র।

ওবায়দুল কাদের : বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার অপপ্রয়াস মাত্র।

বাসস : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে বিএনপি যে অব্যাহত অপপ্রচার আর মিথ্যাচার করছে, তা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা সহজেই তাদের অতীত ভুলে যেতে চাইলেও, জনগণ ঠিকই তা মনে রেখেছে। তাদের শাসনামলে দেশে দিনে ১৩-১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং চলতো। তাদের সময়ে দেশ ছিলো অন্ধকারে নিমজ্জিত।

সেতুমন্ত্রী মঙ্গলবার (২ আগস্ট) গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার জন্য তারা দেশের মূল্যবান খনিজ সম্পদ বিদেশি প্রভুদের হাতে তুলে দিয়েছিলো। বিদ্যুৎ সরবরাহের নামে শুধু খাম্বা স্থাপন করে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছিলো। বিকল্প ক্ষমতা কেন্দ্র হাওয়া ভবন আর খোয়াব ভবন আলোকিত রাখতে গিয়ে সারাদেশকে অন্ধকারে রেখেছিলো বিএনপি।’

তিনি বলেন, ‘সেই অন্ধকারময় সময় পিছনে ফেলে শেখ হাসিনা দেশবাসীকে আলোকিত বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক সকল ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্যের স্মারক রেখেছেন। যা বিশ্বসভায় প্রশংসিত হয়েছে।’

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টরে শেখ হাসিনা সরকার বৈপ্লবিক সাফল্য দেখিয়েছে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ‘ভূমিধস বিজয়ের’ মধ্য দিয়ে যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হয়, তখন দেশে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিলো ২২০ কিলোওয়াট, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৫৬০ কিলোওয়াটে। ২০০৯ সালের শুরুতে দেশে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতাভুক্ত ছিলো মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪৭ শতাংশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালের শুরুতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিলো ৩ হাজার ২৬৭ মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। শুধু তাই নয়, ২০০৯ সালের শুরুতে দেশে বিদ্যুৎ গ্রাহক সংখ্যা ছিলো ১ কোটি ৮ লাখ। ২০২২ এর এপ্রিলে এসে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ২৭ লাখে। সরকারের এ সাফল্যে বিএনপি ঈর্ষান্বিত হয়ে বরাবরের ন্যায় নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়ে যারা কথা বলেন, প্রকৃতপক্ষে তারাই দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষক। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের সুষ্ঠু নীতি ও সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা না থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত করা সম্ভব হতো না। শিল্পায়নের বিকাশ ঘটতো না। 

‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধি ঘটতো না। বরং শেখ হাসিনা সরকার বিএনপির বেসামাল দুর্নীতি ও লুটপাটের পথ বন্ধ করে দেশের জন্য এনার্জি সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন।’ 

‘দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন বিদ্যুতের আলো।’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, করোনা মহামারি পরবর্তী অর্থনীতির পুনরুদ্ধারকালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থমকে দিয়েছে সমগ্র বিশ্বকে। 

‘বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্য অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে।’ 

‘ইতোমধ্যে অনেক দেশ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করেছে।’

‘ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার আশঙ্কা কাটাতে আগাম ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশকেও কিছু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহে রেশনিং করা হচ্ছে। যা একটি সাময়িক পদক্ষেপ।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি মতলবি মহল ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ভুয়া জিগির তুলছেন। প্রকৃতপক্ষে, ভারত থেকে দেশে আমদানিকৃত বিদ্যুতের পরিমাণ মোটের উপর মাত্র ১০ শতাংশ। আবার কেউ কেউ বলছেন, দেশে নাকি ১৩ দিনের অকটেন এবং ১৭ দিনের পেট্রোলের রিজার্ভ আছে। অথচ প্রকৃত সত্য হলো, সামান্য পরিমাণে বুস্টার ছাড়া দেশে অকটেন ও পেট্রোল আমদানি করা হয় না।

তিনি বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের কনডেনসেট থেকে রিফাইন করে পেট্রোল ও অকটেন তৈরি করা হয়।