ইউরোতে একসঙ্গে গোল্ডেন বুট পেতে পারেন ৬ জন

ইউরোতে একসঙ্গে গোল্ডেন বুট পেতে পারেন ৬ জন

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : এক-দুই বা তিনজন নয়, এবারের ইউরোয় গোল্ডেন বুট পেতে পারেন একসঙ্গে ছয়জন। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার নিয়মে পরিবর্তন আনায় এমন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই ছয়জনের মধ্যে তিনজনের অবশ্য কিছুই করার নেই আপাতত। বাকি দুজন হ্যারি কেইন ও দানি ওলমোর সামনে এখনো পুরস্কারটা একান্তই নিজের করে নেওয়ার সুযোগ আছে।

কেইনের ইংল্যান্ড আর ওলমোর স্পেন রবিবার (১৪ জুলাই) বার্লিনে ইউরোর ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে। ইউরোপ–সেরার দলগত লড়াইয়ের মাঝে গোল্ডেন বুটের লড়াইটা চলবে এ দুই ফরোয়ার্ডের মধ্যে।

সাধারণত ব্যক্তিপর্যায়ের পুরস্কারগুলো একজনই পেয়ে থাকেন। এক যুগ ধরে ইউরোর সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার গোল্ডেন বুটও এভাবেই দেওয়া হয়েছে। হিসাবটা যেহেতু গোলের, দেখা যায় একাধিক খেলোয়াড় সমানসংখ্যক গোল করেছেন। এবারই যেমন সেমিফাইনাল পর্যন্ত টুর্নামেন্ট-সর্বোচ্চ ৩ গোল করেছেন কেইন, ওলমো ছাড়াও নেদারল্যান্ডসের কোডি গাকপো, জর্জিয়ার জর্জেস মিকাউতাজে, জার্মানির জামাল মুসিয়ালা ও স্লোভাকিয়ার ইভান শ্রাঞ্জ।

সবশেষ ২০২০ ইউরোতেও টুর্নামেন্ট-সর্বোচ্চ গোল ছিলো একসঙ্গে দুজনের। পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর চেক প্রজাতন্ত্রের প্যাট্রিক শিক ৫টি করে গোল করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত গোল্ডেন বুটের পুরস্কারটা পেয়েছিলেন রোনালদো। কারণ, ৫ গোলের সঙ্গে একটি ‘অ্যাসিস্ট’ও (গোলে সহায়তা) ছিল পর্তুগিজ তারকার, যা শিকের ছিলো না।

উয়েফার তখনকার নিয়ম অনুসারে, গোলের সংখ্যা সমান হলে প্রথমে দেখা হবে কে বেশি গোলে সহায়তা করেছেন। গোলে সহায়তায়ও সমান হলে বিবেচনায় নেওয়া হবে কে কম সময় খেলেছেন। ২০১২ ইউরোয় তিনটি করে গোল ছিলো স্পেনের ফার্নান্দো তোরেস, জার্মানির মারিও গোমেজ ও রাশিয়ার অ্যালান জাগোয়েভের। বাকি দুজনের তুলনায় কম সময় খেলার সুবাদে গোল্ডেন বুট উঠেছিলো তোরেসের হাতে।

গোল সমান হলে অন্যান্য মানদণ্ডের মাধ্যমে গোল্ডেন বুটজয়ী চূড়ান্তের নিয়মটি চালু হয় ২০০৮ ইউরোর পর। এর আগে সর্বোচ্চসংখ্যক গোল যতোজনই করতেন, তাঁরাই পেতেন গোল্ডেন বুট। ইউরোর আয়োজক কর্তৃপক্ষ উয়েফা জানিয়েছে, সেই নিয়মটিই আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে। অর্থাৎ এবারের ফাইনালে কেইন, ওলমো দুজনই যদি গোলহীন থাকেন, তাহলে সর্বোচ্চ তিন গোল থাকা ছয়জনই গোল্ডেন বুট জিতবেন।

তেমনটা ঘটলে নজিরবিহীন এক ঘটনাই ঘটবে। কারণ, এখন পর্যন্ত ইউরোর কোনও আসরেই একসঙ্গে ছয়জন গোল্ডেন বুট জেতেন নি। সর্বোচ্চ পাঁচজন গোল্ডেন বুট জিতেছেন ১৯৬০ সালে ইউরোর প্রথম আসরে। সেবার দুটি করে ম্যাচ খেলে সর্বোচ্চ দুটি গোল ছিল ফ্রান্সিওস হিউত্তে (ফ্রান্স), ভ্যালেন্তিন ইভানভ (সোভিয়েত ইউনিয়ন), ভিক্টর পোনেদেলনিক (সোভিয়েত ইউনিয়ন), দ্রাজান জারকোভিচ (যুগোস্লোভিয়া) ও মিলান গালিচ (যুগোস্লোভিয়া)।

এবারের ফাইনালে ওলমো ও কেইন গোলহীন থাকলেই শুধু ছয়জন গোল্ডেন বুট জিতবেন। দুজনই যদি একটি-দুটি বা সমানসংখ্যক গোল করেন, সেক্ষেত্রে পুরস্কারটা যৌথভাবে তাঁরাই পাবেন। কেইন ও ওলমোর মধ্যে গোল্ডেন বুট এবং দলের ট্রফির পাশাপাশি অন্য একটি লড়াইও আছে। দুজনই খেলছেন জার্মান লিগে। ওলমো লাইপজিগে, কেইন বায়ার্ন মিউনিখে।

টটেনহামে একটি শিরোপা না জিততে পারা কেইন গত মৌসুমে বায়ার্নে নাম লিখিয়ে প্রথমদিনই ট্রফি হাতে তোলার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেদিন জার্মান সুপার কাপের ফাইনালে বায়ার্নের প্রতিপক্ষ ছিলো লাইপজিগ। কিন্তু ম্যাচটা বায়ার্ন জিততে পারে নি। লাইপজিগ কেইনের দলকে হারিয়ে দেয় ৩-০ গোলে। আর লাইপজিগের সেই তিনটি গোল করেছিলেন এই ওলমোই!

২৬ বছর বয়সী ওলমো জানিয়েছেন, কেইনকে আরও একবার ট্রফি-বঞ্চিত করতে চান তিনি, ‘ফাইনালে হ্যাটট্রিক করাটা, দলকে জেতানো, এটা স্বপ্নের মতো ব্যপার।'