পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : দুনিয়ার প্রতিটি মুমিন-মুসলমানের সমস্ত আবেগ-অনুরাগ, ভালোবাসা আর উচ্ছ্বাসে একাকার হওয়া দিন আজ। উৎসব ঘেরা বারোই রবিউল আউয়াল। আজ রোববার পালিত ও উদ্‌যাপিত হবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী রহমাতুল্লিল আলামিন সাইয়েদুল মুরসালিন খাতামুন্নাবিয়ীন সরওয়ারে কায়েনাত তাজদারে মদীনা জগতকুল শিরোমণি সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ আহমদ মুজতাবা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লামের জন্ম ও ওফাত দিবস আজ।

আবেগাপ্লুত কবির ভাষায়- ‘তিনি আলোর মিনার, নূর মদিনার জান্নাতি বুলবুল/তিনি যষ্টি মুকুল মিষ্টি বকুল বৃষ্টি ভেজা ফুল/নিখিলের চির সুন্দর সৃষ্টি আমার মুহাম্মদ রাসূল...।’ 

‘তুমি প্রিয়তম, আমিনা নন্দন/কুল-মুসলিমের হৃদয় স্পন্দন/তুমি বিনে সবই অন্ধকার...।’

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ থেকে প্রায় সাড়ে ১৪শ বছর পূর্বে আইয়ামে জাহেলিয়াতের ঘনঘোর তমসা ছাওয়া ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের সুবহে সাদেকের সময় জাজিরাতুল আরবের মক্কা নগরীর সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মা আমেনার কোল আলো করে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন।  জন্মের পূর্বেই পিতৃহারা হন তিনি। আর জন্মের অল্পকাল পরই বঞ্চিত হন মাতৃস্নেহ থেকে। অনেক দুঃখ-কষ্ট আর অসীম প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে চাচা আবু তালিবের আশ্রয়ে বড় হন। চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হওয়ার পর তিনি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে নবুওয়তের মহান দায়িত্ব লাভ করেন।

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী বিখ্যাত পণ্ডিত মাইকেল এইচ হার্ট তাঁর বহুল আলোচিত ‘দ্য হান্ড্রেড’ গ্রন্থে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ’ হিসেবে স্থান দিয়েছেন। বৃটিশ মনীষী সাহিত্যিক জর্জ বার্নার্ড শ বলেছেন, এই অশান্ত পৃথিবীতে তাঁর মতো একজন মানুষের প্রয়োজন। তিনি বেঁচে থাকলে পৃথিবী জুড়ে সুখের সুবাতাস বইতো। তাঁর আগমনে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছিলো, দুনিয়াজুড়ে তা বিস্তৃত হয়েছে। বিশ্ব নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিন ও ওফাত দিবস একদিনেই বলেই কথিত আছে। তবে তারিখ-সময় এবং বার নিয়ে মতভেদ আছে। তবে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম রবিউল আউয়াল মাসের কোনও এক সোমবার হয়েছে, এক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য সকল ইতিহাসবিদ উলামায়ে কেরামগণ একমত।

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) বা আনন্দঘন রাসূলের জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। রাসূল (সা.) সীরাতের উপর আলোচনা, সিম্পোজিয়াম, সেমিনার ও মিলাদ মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন শোভাযাত্রা বের করবে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনসহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেল বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। আজ সরকারি ছুটির দিন। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। আজ সংবাদপত্রগুলোতে ছুটি পালিত হবে। তাই আগামীকাল দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হবে না।

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব প্রান্তে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এই অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন। এর আগে তিনি বাদ আসর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ চত্বরে মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলার উদ্বোধন করেন।