অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা কি-না, জোর তদন্তের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা কি-না, জোর তদন্তের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : কয়েকদিনের মধ্যেই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডির পর দেশের আরও কয়েকটি জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত রোববার (১২ জুন) রাজশাহী থেকে খুলনাগামী একটি ট্রেনে আগুন লাগে। এর আগে গত শনিবার সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে আগুন লেগেছে একাধিক কারখানা ও ফেরিতেও। এসব অগ্নিকাণ্ড স্রেফ দুর্ঘটনা না-কি নাশকতা, তা নিয়ে গত কয়েক দিন নানা মহলে বিভিন্ন ধরনের জল্পনা-কল্পনা রয়েছে।

সোমবার (১৩ জুন) নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় বিভিন্ন জায়গায় বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে উঠে আসে। একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো নিছক অগ্নিকাণ্ড না-কি পরিকল্পিত নাশকতা, তা তদন্তের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।

বৈঠকে উপস্থিত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। 

প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আগে-পরে যাতে কোনও মহল বিশৃঙ্খলা বা অন্তর্গাতমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সে ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল সংস্থার সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীদিনে দেশের ভেতরে যে কোনও ইস্যুতে যাতে কোনও মহল অপচেষ্টা চালাতে না পারে, সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত আরও একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে আলোচনা হয়েছে একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দেশে-বিদেশে বসে তারা এখনও ষড়যন্ত্র করছে। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। পদ্মা সেতুসহ অন্যান্য মেগা প্রকল্প প্রকল্প সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন হোক, এটা তারা চায় না। আগামীতে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে তারা নতুন ছক সাজাতে পারে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে মনিটরিং জোরদার করতে হবে।

বৈঠকে আলোচনা হয়, সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোতে কেনো একসঙ্গে একই সময় একাধিক জায়গায় থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটলো, তা রহস্যজনক। 

এ ছাড়া প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনে আগুন লাগার কারণ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। এসব ঘটনা নিবিড়ভাবে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে দেশের বাইরে থেকে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। নানা ইস্যুতে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে জল ঘোলার করার চেষ্টা করছে। তারা যেসব ইস্যুতে ভুল ও বিভ্রান্তিকর বার্তা দিচ্ছে, সেই ব্যাপারে প্রকৃত ঘটনা কি, তা সাধারণ জনগণকে পাল্টা তথ্যচিত্রের মাধ্যমে জানাতে হবে। নির্বাচনে আগে বিদেশ থেকে মহলটি নানা ইস্যু নিয়ে আরও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে পারে। 

এ ছাড়া যেসব ক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তা সর্বসাধারণের মধ্যে প্রচার করতে হবে। দ্রব্যমূল্য বাড়াতে যেনো কোনও সিন্ডিকেট কারসাজি করতে না পারে, সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত দায়িত্বশীল আরও এক কর্মকর্তা জানান, এরই মধ্যে সীতাকুণ্ডসহ অন্যান্য এলাকায় যেসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে নানা ধরনের আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি তদন্তে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আলামত বিশ্লেষণ ছাড়াও আরও কয়েকটি সংস্থা সন্দেহভাজন বেশকিছু বিষয় নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করছে।