সরাইলে নানা-নানির কবরের পাশে শেষ শয্যায় বাসচাপায় নিহত দুর্জয়।

সরাইলে নানা-নানির কবরের পাশে শেষ শয্যায় বাসচাপায় নিহত দুর্জয়।
ডন প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : রাজধানীর রামপুরায় বাসচাপায় নিহত শিক্ষার্থী মাঈনুদ্দীন ইসলাম দুর্জয়ের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরের বৈকালবাজার হাটখোলা জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাত আটটায় তাঁকে দাফন করা হয়। এর আগে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ঢাকা থেকে তাঁর লাশ সরাইলে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। শিক্ষার্থী দুর্জয়কে শেষবারের মতো দেখতে স্বজনসহ আশপাশের অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন। লাশ দাফনে অংশ নিতে ঢাকা থেকে তাঁর শতাধিক বন্ধু, সহপাঠী বিভিন্ন যানবাহনে করে সরাইলে পৌঁছান। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তাঁর লাশ নিয়ে আসা থেকে শুরু করে দাফন পর্যন্ত পুলিশ সতর্ক অবস্থায় ছিলো। রাত পৌনে আটটায় বৈকালবাজার হাটখোলা জামে মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাতে দুর্জয়েরসঙ্গে বাস ভাড়া নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়ে বাসের হেলপার। পরে তাঁকে ধাক্কা দিলে রাস্তায় পড়ে যান তিনি। এরপর চলন্ত বাস তাঁর মাথার উপর দিয়ে চালিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় হেলপার (বাসের সহযোগী) চান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর দুর্জয় নিহত হওয়ার ঘটনায় রাতেই বিক্ষুব্ধ জনতা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় ৮টি বাস। দুর্জয়ের বাবা আবদুর রহমান রামপুরায় একটি চায়ের দোকান চালান। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে দুর্জয় সবার ছোট। পরিবারে আর্থিক অনটন থাকায় পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে বাবারসঙ্গে চায়ের দোকানে বসতেন তিনি। তাঁদের গ্রামের বাড়ি সরাইলের হালুয়াপাড়া গ্রামে। দুর্জয়ের খালাতো ভাই খোরশেদ আলম বাংলা কাগজ এবং ডনকে বলেন, প্রায় ১৬-১৭ বছর আগে আবদুর রহমান গ্রামের সব জমি বিক্রি করে ঢাকায় চলে যান। তবে কয়েক বছর আগে হালুয়াপাড়া গ্রামে আবার দুই শতাংশ জমি কিনেছেন আবদুর রহমান। দুর্জয় ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা থেকে সরাইলে এলে তাঁদের বাড়িতেই বেশি থাকতেন। তাই এখন নানা-নানির কবরের পাশেই দুর্জয়ের লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বাংলা কাগজ এবং ডনকে বলেন, এখানে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নি।