শুক্রবারের বিশেষ : রাবি শিক্ষার্থী ইমরানের দায়িত্ব নিলেন মেয়র

শুক্রবারের বিশেষ : রাবি শিক্ষার্থী ইমরানের দায়িত্ব নিলেন মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ ও ডন; লিয়াকত হোসেন, রাজশাহী : পড়াশোনার খরচ চালাতে রাজমিস্ত্রির কাজ করা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী ইমরান হোসেনের পড়াশোনার খরচসহ সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মেধাবী শিক্ষার্থী ইমরান হোসনের পারিবারিক অসচ্ছলতার বিষয়টি মেয়রের নজরে আসে। তাৎক্ষণিকভাবে মেয়র তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটুকে মেধাবী শিক্ষার্থী ইমরান হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু বাঙলার কাগজ ও ডনকে জানান, বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাতে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে ‘পড়াশোনার খরচ চালাতে রাজমিস্ত্রির কাজে রাবি শিক্ষার্থী’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন মেয়রের নজরে আসে। তাৎক্ষণিকভাবে মেয়রের নির্দেশে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে মেধাবী শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন, তাঁর পরিবার ও শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মেয়রের ব্যক্তিগত উদ্যোগে অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী ইমরান হোসেনের পড়াশোনার খরচ এবং থাকা-খাওয়াসহ সকল খরচ বহন করা হবে।

শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র স্যারের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মেয়র স্যার আমার পড়াশোনাসহ সার্বিক দায়িত্ব নেবেন বলেই জানিয়েছেন।

‘রাজশাহীতে পড়াশোনার খরচ চালানো নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এখন দুচিন্তামুক্ত হলাম। মেয়র স্যার সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন, এতে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা অনেক খুশি। আমরা মেয়র স্যারের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।’

যে বিদ্যালয়ে ইমরান হোসেন পড়াশোনা করেছেন, সেই কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, পারিবারিক অসচ্ছলতায় চাপা পড়ে নিষ্পেষিত ইমরান মেধার প্রমাণ দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হয়েছে। ভর্তি হওয়ার পর পড়াশোনার খরচ চালানো নিয়ে সে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলো। পড়াশোনার খরচ জোগাতে রাজমিস্ত্রীর কাজ করছিলো সে। মেধাবী ইমরানের সহযোগিতায় এগিয়ে আসায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়রকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা শিক্ষকবৃন্দ ও এলাকাবাসী মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ইমরান হোসেন পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুর রশিদ মাঝির ছেলে। আট ভাই-বোনের মধ্যে পঞ্চম তিনি।

দারিদ্র্যতা ঠেকাতে পারে নি অদম্য মেধাবী ইমরান হোসেনের পথচলা। কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন তিনি। আগামী পহেলা নভেম্বর থেকে রাবিতে তাঁর ক্লাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।