রংপুর সিটি নির্বাচনে ১৮০৭ ক্যামেরায় নজরদারি

রংপুর সিটি নির্বাচনে ১৮০৭ ক্যামেরায় নজরদারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ; রংপুর : রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে ছয় ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রতিটি বুথে রংপুর সিটি নির্বাচনে নজরদারি রাখবে ১৮০৭ সিসি ক্যামেরা।

এ ছাড়া ভোট কেন্দ্রে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনের সরঞ্জামাদি। 

প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, ইভিএম ব্যবহার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা, পোলিং এজেন্টসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, ভোটারদের ইভিএম সম্পর্কে ধারণা প্রদান সহ ভোট দান প্রক্রিয়া তুলে ধরে দু’দিনের মক ভোটিংও সম্পন্ন করা হয়েছে।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুলিশ লাইন্স স্কুল মাঠে ২২৯ জন প্রিজাইডিং অফিসারকে এক হাজার ৩৪৯টি কক্ষের ৪ হাজার ৪৭টি ইভিএম মেশিনসহ সরঞ্জামাদি বিতরণ করা হয়।

সরঞ্জামাদি বিতরণের উদ্বোধন করেন রংপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন। এছাড়াও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নুরেআলম মিনা, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেনসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে ৩৩টি ওয়ার্ডে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটও মাঠে থাকবেন। এর মধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ৩৩ জন এবং বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ১৬ জন। নির্বাচনী অপরাধ রোধ, বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে দায়িত্ব পালন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার নিমিত্তে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন তারা। পুরো নির্বাচনী এলাকা ছয় ধরনের নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখবো আমরা। প্রতিটি কেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবো। এর বাহিরে পুরো রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। দুটি কেন্দ্রের জন্য একটি করে র‌্যাবের টিম থাকবে। কেন্দ্রে পুলিশ অস্ত্রসহ এবং অস্ত্র ছাড়া থাকবে। বিজিবি ও র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে থাকবে। টহল টিমের পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, রোববার রাত ১২টায় নির্বাচনী আনুষ্ঠানিক সব প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে।প্রার্থীরা আর কোনো ধরনের প্রচারণা করতে পারবেন না। নির্বাচনে ১১ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি থাকছে র‌্যাব ও বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্স। নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাঠ প্রশাসনকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনাও দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ইভিএম মেসিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে যে পরিমাণ ইভিএম ব্যবহার হবে। তার দ্বিগুণ ইভিএম আমরা প্রস্তুত রেখেছি। কোনোখানে ইভিএমএ সমস্যা হলে সেটি কেন্দ্রে থাকা টেকনিক্যাল লোকজন ঠিক করে দেবে। যদি তারা ব্যর্থ হয় তবে মোবাইলে থাকা টেকনিক্যাল টিম সেটি ঠিক করবে। যদি তারাও ঠিক করতে না পারেন, তাহলে ওই কেন্দ্রের ভোট যতটুকু ওই ইভিএমে নেওয়া হয়েছে ততটুকু অক্ষুন্ন থাকবে। সবার উপস্থিতিতে সেটিও সংরক্ষণ করে রাখবে এবং নতুন আরেকটি ইভিএম ব্যবহার করবে। ২২৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৬টি কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। সবাই যাতে নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এর জন্য সব ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোটার ছাড়া অন্য কেউ ভোটকক্ষের গোপন বুথে প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রবেশ করলেই সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়বে এবং তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তৃতীয় দফায় ২৭ ডিসেম্বর মহানগরের ২২৯টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৪৯টি কক্ষে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ২২৯ জন এবং সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা থাকবেন ১ হাজার ৩৪৯ জন। মোট পোলিং অফিসার থাকবেন দুই হাজার ৬৯৮ জন।