মূসকের হাত ধরে সোয়া ৩ লাখ কোটি টাকার রেকর্ড রাজস্ব আদায়।
admin
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : সদ্য শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট থেকে।
জানা গেছে, অর্থবছরটিতে প্রায় ৩ লাখ ২ শ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব হয়েছে। এর আগে দেশের ইতিহাসে রাজস্ব সংগ্রহ কখনো ৩ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় নি।
গত অর্থবছরের এই আহরণ ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৪০ হাজার ৩ শ কোটি টাকা বা ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৯ শ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিলো।
তবে রাজস্ব আদায়ের এই রেকর্ড লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ২৯ হাজার ৮ শ কোটি টাকা কম। গত অর্থবছরে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো সরকারের।
জানতে চাইলে এনবিআরের গবেষণা ও পরিসংখ্যান অনুবিভাগের মহাপরিচালক ড. এ কে এম নূরুজ্জামান বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘এনবিআর এবার প্রথমবারের মতো ৩ লাখ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আদায় করেছে।’
আগামী ২৮ জুলাই এনবিআর চেয়ারম্যান আনুষ্ঠানিকভাবে গত অর্থবছরের রাজস্ব আহরণের তথ্য গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরতে পারেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখনো কিছু রাজস্ব গত অর্থবছরের হিসাবে যুক্ত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে এনবিআরের গবেষণা ও পরিসংখ্যান অনুবিভাগের একজন কর্মকর্তা বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, গত অর্থবছরে প্রায় ৩ লাখ ২ শ00 কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি জানান, গত অর্থবছর সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ৮ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট থেকে। আগের অর্থবছরের তুলনায় যা ১১ শতাংশ বেশি।
২০২০-২১ অর্থবছরে ভ্যাট থেকে মোট আদায় হয়েছিলো ৯৭ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা।
গেলো অর্থবছরে আয়কর থেকে মোট আদায় হয় ১ লাখ ২ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৭ হাজার ১১৬ কোটি টাকা বা ২১ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরে আদায় হয়েছিলো ৮৫ হাজার ২২৪ কোটি টাকা।
এনবিআরের শুল্ক বিভাগের (কাস্টমস) একজন সদস্য বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, গত অর্থবছরে শুল্ক বিভাগ থেকে আদায় হয়েছে প্রায় ৮৯ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা।
এইখাত থেকে গত অর্থবছরের আদায় ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরে শুল্কখাত থেকে আদায় হয়েছিলো ৭৭ হাজার কোটি টাকা।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘৩ লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আহরণ একটা ল্যান্ডমার্ক। এজন্য এনবিআরকে সাধুবাদ দিতে হবে।’
তবে সংস্থাটি এবারও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশ পিছিয়ে রয়েছে উল্লেখ করে চলতি অর্থবছরের জন্য নির্ধারণ করা ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আব্দুল মজিদ আরও বলেন, ‘এনবিআরের বিদ্যমান কাঠামো দিয়ে এই টার্গেট পূরণ করা সম্ভব নয়। এই টার্গেট পূরণ করতে হলে এনবিআরের অবকাঠামো শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে।’
