ভালোবাসা দিবস : কালজয়ী পাঁচ ভালোবাসার ছবি

ভালোবাসা দিবস : কালজয়ী পাঁচ ভালোবাসার ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : ঢাকার চলচ্চিত্রের ৫৫ বছরে অনেক প্রেমের ছবি রয়েছে, যা আজও হৃদয়ে দাগ কাটে। নির্মাতারা ভালোবাসাকে তাঁদের সেলুলয়েডের ফিতায় বিভিন্নভাবে বন্দি করেছেন। কখনও বাবার প্রতি ভালোবাসা, কখনও মায়ের প্রতি, আবার কখনও সন্তান বা দেশের প্রতি। তবে প্রেমিক-প্রেমিকার ভালোবাসার গল্পই বেশি গ্রহণ করেছেন দর্শকেরা। কোনও কোনও ছবিতে নায়ক-নায়িকার সফল পরিণতি হয়েছে, আবার কোনও কোনও ছবিতে মিলন হয় নি। দর্শক কিন্তু দুই ধরনের ছবিই গ্রহণ করেছেন। সেখান থেকে পাঁচ ছবির গল্প নিয়েই ভালোবাসা দিবসের এই আয়োজন :

নয়নমনি : গ্রামের পটভূমি নিয়ে ‘নয়নমনি’ ছবির কাহিনি তৈরি করেছেন পরিচালক আমজাদ হোসেন। এ সিনেমায় প্রেম-ভালোবাসাকে পরিচালক খুব সহজভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘নয়নমনি’ দেখে তখন অনেকেই নয়ন জুড়িয়েছিলেন। এতে যেমন আছে সংসার-সমাজ-ত্যাগী মানুষ, আছে কালোবাজারি, খুদে ব্যবসায়ী; আছে মুখ থুবড়ে পড়ে মার খাওয়ার ভীরুতা। সিনেমায় ফারুক-ববিতার প্রেম সবাইকে মুগ্ধ করেছিলো। এ সিনেমার পর এক জনপ্রিয় জুটিতে পরিণত হন তাঁরা দু’জন।

হারানো দিন : মোস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ সিনেমার কাহিনি গড়ে উঠেছে চিরকুমার জমিদার রশীদ চৌধুরীকে নিয়ে। রশীদ ভিনদেশি এক যাযাবর মেয়ে মালাকে নিজের কাছে এনে লেখাপড়া শেখায় ও তার প্রেমে পড়ে। কিন্তু মালা তার অতীত জীবনকে ভুলতে গিয়ে কামালকে ভালোবাসে। এ ভালোবাসাই একদিন মালার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৬১ সালের ৪ আগস্ট মুক্তি পাওয়া এ ছবিতে পরিচালক অসম প্রেমের চিত্র তুলে ধরতে চেয়েছেন।

বেহুলা : বাংলার প্রচলিত লোককাহিনি, হিন্দু পুরাণ মনসামঙ্গল কাব্যের বেহুলা-লখিন্দরের উপাখ্যান অবলম্বনে ‘বেহুলা’ সিনেমাটির চিত্রনাট্য ও নির্মাণ করেছেন জহির রায়হান। লখিন্দরের ভূমিকায় তৎকালীন নায়কদের পছন্দ না হওয়ায় নতুন কাউকে নেওয়ার কথা ভাবেন নির্মাতা। রাজ্জাককে দেখে পছন্দ হয় জহির রায়হানের। এক সপ্তাহ দাড়ি না কেটে আবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বললেন। সাত দিন পর খোঁচা খোঁচা দাড়িতে দেখে লখিন্দর চরিত্রে চূড়ান্ত করেন রাজ্জাককে। চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে এটিই ছিল তাঁর প্রথম ছবি। ‘বেহুলা’ চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম আমি। ১৯৬৬ সালে এটি মুক্তি পায়। সিনেমাটি দর্শক প্রশংসা কুড়িয়েছিল।

অনন্ত প্রেম : ১৯৭৮ সালের দিকে মুক্তি পেয়েছিল সিনেমা ‘অনন্ত প্রেম’। এতে ববিতার বিপরীতে ছিলেন রাজ্জাক। এটি তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ূয়া ছাত্রীর প্রেম নিয়ে সিনেমার গল্প। গল্পকাঠামোতে নতুনত্বের কারণেই দর্শকদের কাছে সিনেমাটি দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সিনেমার গান শ্রোতার হৃদয় ছুঁয়েছিল।

বেদের মেয়ে জোস্‌না : ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রেমের সিনেমা ‘বেদের মেয়ে জোস্‌না’। তোজাম্মেল হক বকুলের এ সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৮৯ সালে। রাজকুমারের সঙ্গে বেদেনির প্রেম নিয়ে সিনেমার গল্প। এটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল সিনেমা। পশ্চিমবঙ্গেও পুনর্নির্মাণ করে মুক্তি পায় এটি। সিনেমার কাহিনি থেকে সংলাপ ও অভিনয় প্রত্যেক দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।