বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরি : তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে তলব

বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরি : তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খানকে তলব করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) তাঁকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিব রোববার (২ অক্টোবর) এ আদেশ দেন। বাঙলার কাগজ ও ডনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, এই মামলায় রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য ছিলো। তবে সিআইডির পক্ষ থেকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। এ নিয়ে ৫৯ বার এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় পেছানো হয়েছে।

নতুন আবেদনের বিষয়ে আদালত মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) শুনানির দিন ঠিক করেছেন। সেদিন কর্মকর্তা রায়হান উদ্দিন খানকে আদালতে হাজির থাকার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সুইফট পেমেন্ট পদ্ধতিতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়। এই অর্থ ফিলিপাইনের মাকাতি শহরে রিজাল ব্যাংকের শাখায় চারটি অ্যাকাউন্টে যায় এবং সেখান থেকে দ্রুত টাকা উত্তোলন করা হয়। পরে বিভিন্ন সময় ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ফেরত আসে। এখনো ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধার হয় নি।

ঘটনার ৩৯ দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে মতিঝিল থানায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি, মানি লন্ডারিং ও সাইবার অপরাধ দমন আইনের ধারায় মামলা করা হয়। পরে ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে।

মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, রিজার্ভ চুরির সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্তত ১৩ কর্মকর্তার গাফিলতি, অবহেলা ও দায় ছিলো। রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংক একদিন পর জানতে পারলেও তা ২৪ দিন গোপন রাখে। ৩৩তম দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি অর্থমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়। বিষয়টি জানাজানি হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে একই বছরের ১৫ মার্চ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। রিজার্ভ চুরির ঘটনার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন ড. আতিউর রহমান। পরে তাঁকে এ ঘটনার দায়ে পদত্যাগ করতে হয়।