বাজেটের ডিজিটাল উপস্থাপন : রেলের উন্নয়ন নিয়ে মহাপরিকল্পনা।

বাজেটের ডিজিটাল উপস্থাপন : রেলের উন্নয়ন নিয়ে মহাপরিকল্পনা।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : শুরু হতে যাওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে রেলপথ খাতে উন্নয়নের মহাপরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুন) প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপনকালে তিনি এই মহাপরিকল্পনার কথা জানান। 

অর্থমন্ত্রী অডিও ভিজ্যুয়ালের মাধ্যমে ডিজিটালি তাঁর অধিকাংশ প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

এর আগে সংসদের অধিবেশন শুরুর পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর অনুমোদনক্রমে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ ও স্বল্প খরচে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশ রেলওয়ের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার এ খাতের সমন্বিত ও সুষম উন্নয়নে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩০ বছর মেয়াদি (২০১৬-২০৪৫) সংশোধিত মহাপরিকল্পনা অনুসারে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে কক্সবাজার, মোংলা বন্দর, টুঙ্গীপাড়া, বরিশাল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য এলাকা রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে ও আঞ্চলিক রেলওয়ে যোগাযোগ স্থাপন এবং উন্নত কমিউটার ট্রেন সার্ভিস চালুর মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর সঙ্গে নিকটবর্তী শহরতলীর যোগাযোগ স্থাপনের জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ মহাপরিকল্পনার আওতায় ছয় ধাপে ৫ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৩০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় রেলওয়ের জন্য ৭৯৮ দশমিক শূন্য ৯ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, বিদ্যমান রেললাইনের সমান্তরালে ৮৯৭ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ/ডাবল রেললাইন নির্মাণ, ৮৪৬ দশমিক ৫১ কিলোমিটার রেল লাইন সংস্কার, ৯টি গুরুত্বপূর্ণ রেল সেতু নির্মাণ, লেভেল ক্রসিং গেইটসহ অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপো নির্মাণ, ওয়ার্কশপ নির্মাণ ও আধুনিকায়ন, ১৬০টি লোকোমোটিভ, ১ হাজার ৭০৪টি যাত্রীবাহী কোচ, আধুনিক রক্ষণাবেক্ষণ যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, ২২২টি স্টেশন সিগনালিং ব্যবস্থার মানোন্নয়নসহ রেলওয়ের সার্বিক ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়নের জন্য ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। 

পদ্মা বহুমুখী সেতুর রেল লিঙ্ক প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৫৮ শতাংশ। 

এ ছাড়া যমুনা নদীতে ডাবল ট্র্যাক ডুয়েলগেজ রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৪০ শতাংশ। দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তের নিকটবর্তী গুনধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ কাজের ৭১ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এবং খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। 

এ ছাড়া রূপসা রেল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সরকার পায়রা বন্দরকে পদ্মা রেল লিঙ্কের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল ও পটুয়াখালী হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

উল্লেখ করা যেতে পারে, ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরে আগামী অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা; যা জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।