প্রধানমন্ত্রী : আমি তো মডেল নই, আমি রাজনীতিবিদ

প্রধানমন্ত্রী : আমি তো মডেল নই, আমি রাজনীতিবিদ
ডন প্রতিবেদন : প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি তো মডেল নই, আমি রাজনীতিবিদ। দেখবেন, কোনও কোনও দেশের সরকারপ্রধান তাঁর সাজগোজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু সেটা ঠিক নয়। আবার আমাদের মতো দেশগুলোতে আদর্শ হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এটা হওয়াও কোনোভাবেই কাম্য নয়। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে গণভবনে সোমবার (৪ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বার বার তাগিদ দেওয়ার পরও আশাব্যাঞ্জক সাড়া না পাওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনও কোনও সংস্থা রোহিঙ্গাদের শরণার্থী করে রাখতেই বেশি আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘মনে হয় রিফিউজি পালাটা একটা ব্যবসা কোনও কোনও সংস্থার জন্য। রিফিউজি না থাকলে তাদের চাকরিই থাকবে না। এটা হল আসল কথা।’ রোহিঙ্গা সঙ্কট এবার পঞ্চম বছরে গড়িয়েছে, কিন্তু নিপীড়িত এই জনগোষ্ঠীর একজনকেও এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয় নি। এরমধ্যে মিয়ানমারে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে অনিশ্চয়তা আরও বেড়েছে। এ বিষয়টি তুলে ধরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো ভূমিকা ও অব্যাহত সহযোগিতা আশা করি। মিয়ানমারকে অবশ্যই তার নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহযোগিতা করতে সদা প্রস্তুত।’ এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকাণ্ডে মনে হয়, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের নিজ ভূমিতে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাদের খুব বেশি আগ্রহ আছে বলে মনে হয় না। ‘আমার কাছে একটা জিনিস মনে হয়, রিফিউজি থাকলে কিছু লোকের মনে হয় লাভই হয়। অনেক প্রস্তাব আসে রোহিঙ্গাদের জন্য এখানে অনেক কিছু করে দিতে চায়। আমি সোজা বলে দিই, যান মিয়ানমারে, ওখানে ঘর করেন, স্কুল করেন, এখানে করা লাগবে না। আমার কাছে যেটা মনে হয়, (তাদের কাছে) সব কিছুই যেন একটা ব্যবসা।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সংস্থা আছে, যারা রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধানে বরাবারই ভালো সাড়া দিয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু সংস্থা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে সেই আগ্রহ দেখায় না। বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার এই চাপে কক্সবাজারের পরিবেশ ও প্রতিবেশের যে ক্ষত হচ্ছে, সে কথা জাতিসংঘে তুলে ধরার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেখানে নানা ধরনের অসঙ্গতি চলছে, নারী পাচার, শিশু পাচার, সবচেয়ে বড় ড্রাগ… এই ড্রাগ পাচারের সাথে জড়িয়ে পড়ছে তারা (রোহিঙ্গারা)। যেটা আমাদের জন্য সবচেয়ে আশঙ্কাজনক।’ ‘আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলছি, এটা সেখানে হচ্ছে, আরও হবে, যদি প্রত্যাবাসন না হয়।’ মানুষ বিএনপিকে কেনো ভোট দেবে? : ‘একটা দল কীভাবে জিতবে, তার নেতৃত্বটা কোথায়? একজন এতিমের টাকা চুরি করে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আরেকজন গ্রেনেড হামলার মামলায় কারাদণ্ড নিয়ে দেশান্তরি, সাজাপ্রাপ্ত আসামি। জনগণ কোন ভরসায় ওই দলকে ভোট দেবে।’ ‘জনগণ কখন ভোট দেয়? মানুষ দেখে ওই দলকে ভোট দিলে ক্ষমতায় কে যাবে। তারা (বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান) তো ইলেকশনও করতে পারবে না।’ বিএনপি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিশ্বাসই হারিয়ে ফেলেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা জানে যে তাদের কোনও সম্ভাবনা নাই। সম্ভাবনা যখন নাই, যেভাবে হোক নির্বাচনটা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা, অর্থাৎ গণতন্ত্রের যে ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে, সেটা নষ্ট করা।’ সাংবাদিকদের সামনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদেরকে ভোট দেবে কেনো- এই প্রশ্নটা করেন না। জনগণ ভোট দিতে পারছে না- এই কথাটা যারা বলে…, মানুষ তাদের ভোট কেন দেবে?।’ ‘কারা কেন কোন সুখের স্বপ্নে বা কোন আশার আলো দেখে বিএনপিকে ভোট দেবে? সেটাও একটু জিজ্ঞেস করেন, জেনে রাখি।’ বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতার এই সংবাদ সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার করে।