প্রধানমন্ত্রীর 'না জানা' দুর্নীতি, প্রশ্ন ফাঁস ও কোটা সংস্কার

প্রধানমন্ত্রীর 'না জানা' দুর্নীতি, প্রশ্ন ফাঁস ও কোটা সংস্কার

সম্পাদকীয় মত, বাঙলার কাগজ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাকি অনেক কিছুই জানেন না। তিনি নাকি তাঁর ঘরের খবরও জানেন না। আর তিনি তা স্বীকারও করলেন রবিবার (১৪ জুলাই) চীন সফরোত্তর সংবাদ সম্মেলনে। তিনি জানালেন, তাঁর বাসায় কাজ করতো, সে নাকি এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক, হেলিকপ্টার ছাড়া চলেই না। বড় অবাক হওয়ার বিষয়। আমরা যখন দেখি পিএসসি'র চেয়ারম্যানের দুর্নীতি ধরা পড়ার পর তার গাড়ি চালকেরও দুর্নীতি ধরা পড়েছে, ঠিক এই মুহূর্তে তথ্যটি জানালেন প্রধানমন্ত্রী। আমার ঘরের 'কাজের লোক' যদি কী করে; সেটাই আমি না জানি, তাহলে তো যে রান্না করে, সে আমাকে বিষ মিশিয়েও খাইয়ে দিতে পারে। সুতরাং একজন প্রধানমন্ত্রী সবকিছু জানেন না তা হতে পারে না। কারণ এটি একটি অযোগ্যতা। যা শেখ হাসিনার হতে পারে না। আর জানলে তিনি বিচার করলেন না কেনো। গলটদা তাহলে কোথায়?

বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা অনেক শক্তিশালী, তাঁদের কাছে সকল তথ্য রয়েছে। গোপালগঞ্জের সাবেক পুলিশপ্রধান যখন এতো দুর্নীতি করছিলো, তখন কি তা প্রধানমন্ত্রী জানতেন না!

বড় বড় পদে যতো দুর্নীতিবাজ আছে, সকলের খবর প্রধানমন্ত্রীর কাছে আছে। তাহলে তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেনো, বিষয়টা কি? দুই-চারজন চুনোপুটিকে ধরার পর একজন রাঘববোয়ালকেও শাস্তির মুখোমুখি করা হয় নি এখনও।

দেশে যে এতো প্রশ্ন ফাঁস, এতো কিছু; এগুলোও কি গোয়েন্দারা জানেন না? নাকি দুর্নীতিবাজদের ধরতে বাধা আছে।

এতোগুলো ব্যাংক থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে সরিয়ে নেওয়া হলো, সেটাও কি প্রধানমন্ত্রী জানেন না!

দেশের শিক্ষার্থীরা সংবিধান অনুযায়ী কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের কথা বলছেন, বাতিলের কথা বলেন নি। হাইকোর্টের রায়েও নির্বাহী বিভাগ কোটা সংস্কার করতে পারবে বলে বলা হয়েছে। এরপরও এতো জালিয়াতি আর দুর্নীতির পর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কথাও কি প্রধানমন্ত্রী জানেন না? নাকি জানেন না, রাজাকারের মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেটের খবর। তাহলেও এখন কেনো মোট ৫৬ শতাংশ কোটা রাখা হবে। মেধার ভিত্তিতে শুধু ৪৪ শতাংশ লোক নিয়োগ পাবে! পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া গরীবের সন্তান মেধাবী ছাত্রদের কি চাকরি পাওয়ার অধিকার নেই? নাকি প্রধানমন্ত্রী সব জেনে-বুঝেও ঘুরিয়ে-প্যাঁচিয়ে কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রী, খোঁজ নিয়ে দেখুন, কোটার নিয়োগে কী পরিমাণ জালিয়াতি। আর আপনি তো সবই জানেন, এরপরও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা তাঁদের নাতি-নাতনি এবং নারী'র কোটা ৫ শতাংশ হারে রেখে, জেলা কোটা বাদ দিয়ে, উপজাতি আর প্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু কোটা রেখে সার্বিকভাবে কোটা করতে পারেন সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। কারণ উপজাতি কোটা থাকলে, তখন আর জেলা কোটা লাগে না। গরীবের সন্তানদের আকুতি শুনুন প্রধানমন্ত্রী, না হয় তাঁদের বেকার রাখার জন্য আপনি দায়ী থাকবেন।