পদ্মা সেতু’র থিম সংয়ের শুটিংয়ে দশ শিল্পী। সাংবাদিকদের সেতু দেখালেন ওবায়দুল কাদের।

পদ্মা সেতু’র থিম সংয়ের শুটিংয়ে দশ শিল্পী। সাংবাদিকদের সেতু দেখালেন ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে থিম সং তৈরি করেছেন দশ শিল্পী। এরইমধ্যে গানের শুটিংও শেষ হয়েছে সেতু এলাকায়।

এদিকে সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে সেতু দেখিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, ২৫ জুন সবাইকে নিয়ে উৎসব হবে পদ্মার দুই পাড়ে।

সাবিনা ইয়াসমিন, রফিকুল আলম, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, কুমার বিশ্বজিৎ, বাপ্পা মজুমদার, মমতাজ থেকে দিলশাদ নাহার কনা, ইমরান মাহমুদুল আর নিশীতা বড়ুয়ারা এসেছিলেন পদ্মা পাড়ে। তাঁরা শুটিং করলেন পদ্মা সেতুর থিম সং নিয়ে।

যেখানে তাঁরা উদ্বোধনের আগেই পদ্মা সেতুর ওপর হেঁটেছেন, গেয়েছেন আর ফটোশুট করেছেন। 

সবাই মিলে সোমবার (১৩ জুন) দিনটি কাটিয়েছেন স্বপ্নের সেতুর ওপর। 

শিল্পীরা বললেন, তাঁরা এই সঙ্গীতে অংশ নিয়ে অংশ হয়ে গেলেন একটি ইতিহাসের। কবীর বকুলের লেখা থিম সংয়ে সুর করেছেন কিশোর দাস।

জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এটা অনেক গৌরব ও মর্যাদার একটা বিষয়। আর আমাদের টাকায় আমাদের সেতু, সেটা আরও বড় প্রাপ্তি। আমি শুধু এতটুকু বলবো যে, এটা বাংলাদেশের শুধু একটা ইতিহাস না, এটা একটা গৌরবের ইতিহাস।

জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা বলেন, এটা আসলেই একটা স্বপ্ন ছিলো এবং এখন সেটার বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছি। অনেকের মতো আমিও অপেক্ষায় ছিলাম। আজকে যখন এতো কাছ থেকে দেখলাম সেতুটা, তখন সত্যিই অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করছে।

‘পদ্মা সেতুকে ঘিরে যে থিম সং হচ্ছে, সেটার সঙ্গে থাকতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। যাঁদের সঙ্গে গাইছি, কাজ করছি, অনেক বড় মানুষ, তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে পেরেও অনেক ভালো লাগছে।’

পদ্মা সেতুর থিম সং থেকে ‘জয় বাংলার জয়, ধ্বনিত জয়তু, বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন দেশ, তুমি দিলে মর্যাদা, পদ্মা সেতু’ লাইনটি গেয়ে শোনান গীতিকার কবির বকুল নিজেই। বলেন, দুটি কারণে আমরা সত্যিই সৌভাগ্যবান।

‘প্রথম কারণ, স্বপ্নের এই সেতুটি খুলে দেওয়ার আগেই আমরা সেটিতে পা ফেলতে পেরেছি। এটা অন্যরকম অনুভূতির বিষয়। দ্বিতীয় কারণ হলো, এ সেতুকে ঘিরে যে থিম সং, তা লেখার সুযোগ হয়েছে আমার। যা সুর করেছেন কিশোর। আর গেয়েছেন দেশ সেরা ১০ শিল্পী।’

গানটির সুরকার কিশোর বলেন, বিশেষ এই গানটির সুর ও সঙ্গীত তৈরি করার পাশাপাশি গাইবার সৌভাগ্য হলো আমার। এরপর পদ্মা সেতুতে এসে ভিডিওতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেলাম। এ এক অসাধারণ অনুভূতি। এক জীবনে এমন সৌভাগ্যের দেখা খুব কম মানুষই পায়।

সেতু মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যৌথ আয়োজনে তৈরি হচ্ছে ‘পদ্মা সেতু’ নামের এই ভিডিওটি। যা ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে বাজবে। প্রচার হবে দেশের প্রায় সব অডিও-ভিডিও গণমাধ্যমে। 

এদিকে এদিন পদ্মাপাড়ে মিলিত হন ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জের আড়াইশ’রও বেশি সাংবাদিক। তাঁদের সেতু প্রান্তে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সেতুমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অসীম সাহসের সোনালি ফসল। বঙ্গবন্ধু কন্যা এই সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ দুর্নীতি করে না।

তিনি বলেন, আগামী ২৬ জুন সকাল ৬টা থেকে এই সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল করবে। পদ্মা সেতুর স্থায়িত্ব ধরা হয়েছে ১ শ বছর।

সেতুমন্ত্রী আরও জানান, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে খুবই জমকালো। মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ৬৪টি জেলাতেও দেখানোর ব্যবস্থা থাকবে। অর্থাৎ দেশজুড়ে উৎসব পালন করা হবে।

২৫ জুন সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জ প্রান্তে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সেতু পেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী যাবেন জাজিরা প্রান্তে। এ প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের পর দলীয় জনসভায় যোগ দেবেন তিনি।

মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ীতে উদ্বোধনী জনসভার মঞ্চটি করা হচ্ছে পদ্মা সেতুর আদলে। পদ্মা সেতুর সাতটি পিলার। নিচে প্রবল স্রোত।

পিলারের নিচ দিয়ে বয়ে চলছে পালতোলা নৌকা। অধিকাংশ নৌকায় আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা। আবার মাছ ধরার ট্রলারও যাওয়া-আসা করছে। দেখতে ঠিক যেনো পদ্মা সেতুই।