তিন মাস আগে ‘নিখোঁজ’ মাজুল ফিরে এলেন স্বজনদের কাছে।

তিন মাস আগে ‘নিখোঁজ’ মাজুল ফিরে এলেন স্বজনদের কাছে।
ডন সংবাদদাতা, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলস্টেশন-সংলগ্ন ফুলেরতল বাজারে অপরিচিত এক ব্যক্তি কয়েকদিন ধরে ঘোরাঘুরি করছিলেন। তাঁর বাঁ পায়ে গুরুতর ক্ষত দেখা দিলে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। পরে ওই ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে স্বজনেরা তাঁকে খুঁজে পান। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) রাতে ওই ব্যক্তি স্বজনদের মাধ্যমে বাড়ি ফিরে গেছেন। ওই ব্যক্তির নাম মাজুল ইসলাম (৪০)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার সিমরাইল সাতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আলী আহমদের ছেলে। পরিবারে তাঁর স্ত্রীসহ এক ছেলে ও এক মেয়ে আছেন। মাজুল দীর্ঘদিন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ছিলেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে তিনি দেশে ফেরেন। এরপর মাজুল মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রায় তিন মাস আগে মাজুল কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এর পর থেকে মাজুলের কোনও খোঁজ পায় নি তাঁর পরিবার। ফুলেরতল বাজারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে মাজুলকে ফুলেরতল বাজারে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। তবে তিনি লোকজনের সঙ্গে তেমন কথাবার্তা বলতেন না। নাম-পরিচয় জানতে চাইলে মুখ ফিরিয়ে নিতেন। লোকজন তাঁকে খাবার দিতেন। পরে তাঁর পায়ের ক্ষতে পোকা ধরতে দেখে স্থানীয় লোকজন ‘মানবিক টিম’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে ওই সংগঠনের উদ্যোগে মাজুলকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে ছাড়পত্র দেন। এ সময় মাজুলের পরিচয় জানতে সংগঠনের পক্ষ থেকে ফেসবুকে মাজুলের ছবি পোস্ট করা হয়। পরে ছবি দেখে মাজুলের স্বজনেরা তাঁকে শনাক্ত করেন। গতকাল রাতে মাজুলের স্বজনেরা ফুলেরতল বাজার থেকে মাজুলকে বাড়ি নিয়ে গেছেন। মানবিক টিমের প্রধান সমন্বয়ক ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (মিডিয়া ও কমিউনিটি সার্ভিস) নায়েক সফি আহমদ বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, মাজুলকে স্বজনদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরে তাঁরা খুশি। সিলেটে নেওয়ার পর তাঁরা সার্বক্ষণিক মাজুলের চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়েছেন। তবে মাজুল এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন নি। মাজুলের বড় ভাই মোহন মিয়া মুঠোফোনে বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ার পর তাঁরা মাজুলের চিকিৎসা করালেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। নিখোঁজের পর তাঁরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেছেন। থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। তবে এরই মধ্যে ফুলেরতল বাজারের লোকজনসহ মানবিক টিমের সদস্যদের সহায়তায় ভাইয়ের খোঁজ পেয়েছেন। তাঁরা এখন মাজুলের চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন।