ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দেখতে চায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দেখতে চায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ভোররাতে এক ভিডিওতে এই রূপরেখার ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। ভিডিওটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে নাহিদের পাশে আসিফ ছাড়াও আরেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ছিলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবের জন্য তাঁরা ২৪ ঘণ্টা সময় নিয়েছিলেন। জরুরি পরিস্থিতিতে তাঁরা এখনই একটি রূপরেখা ঘোষণা করছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সর্বজন গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। তিনি ছাত্র–জনতার আহ্বানে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে এই গুরুদায়িত্ব নিতে সম্মত হয়েছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা সকালের মধ্যেই এই সরকার গঠনের প্রক্রিয়া দেখতে চান। রাষ্ট্রপতির কাছে আহ্বান থাকবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হোক। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাকি সদস্যদের নামও তাঁরা সকালের মধ্যে ঘোষণা করবেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত মুক্তিকামী ছাত্র–জনতাকে রাজপথে থেকে তাঁদের অভ্যুত্থান রক্ষা করতে হবে। তাঁরা রক্ত দিয়েছেন, শহিদ হয়েছেন। তাঁদের যে প্রতিশ্রুতি একটি নতুন বাংলাদেশ গঠন করার জন্য, সেটিকে তাঁদের অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে। অবশ্যই ছাত্র–জনতার প্রস্তাবিত সরকার বাদে কোনও ধরনের সরকার মেনে নেওয়া হবে না। অভ্যুত্থানকারী ছাত্র–জনতার যে প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, তাঁরা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে এই সরকার গঠন করা হবে। সেই সরকারকেই বাস্তবায়ন করতে হবে অবিলম্বে।

শিক্ষার্থী আন্দোলনের মুখে সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিকেল চারটার দিকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে কাজ পরিচালনা করবো। ধৈর্য ধরেন, সময় দেন।’ তারপর এ নিয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ বিষয়ে বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

বঙ্গভবন থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে অনতিবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। আর লুটতরাজ ও হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধে সেনাবাহিনী পদক্ষেপ নেবে। বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিরা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।