ডেপুটি গভর্নর পদে আসতে এস আলম ঘনিষ্ঠদের দৌঁড়ঝাপ

ডেপুটি গভর্নর পদে আসতে এস আলম ঘনিষ্ঠদের দৌঁড়ঝাপ

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : বাংলাদেশ ব্যাংকে ডেপুটি গভর্নরের শূন্য পদে নিয়োগ পেতে দৌঁড়ঝাপ করছেন এস আলম ঘনিষ্ঠরা। এতোদিন নানা উপায়ে গ্রুপটিকে অনৈতিক সুবিধা দিতে কাজ করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কারও-কারও নাম আলোচনায় আসায় নতুন করে অস্থিরতার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সততা, দক্ষতা ও যোগ্যতা বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া না হলে তাঁরা বিক্ষোভ করবেন বলে জানা গেছে।

সরকার পতনের পর গত ৬ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকে এস আলম ঘনিষ্ঠ গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরদের পদত্যাগের দাবিতে নজিরবিহীন বিক্ষোভ হয়। এরপর আব্দুর রউফ তালুকদার পলাতক অবস্থায় পদত্যাগ করেছেন। ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান, খুরশীদ আলম, বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস ও নীতি উপদেষ্টা আবু ফারাহ মো. নাছের পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।

সম্প্রতি বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুরকে গভর্নর নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আর ডেপুটি গভর্নরের শূন্য পদে নিয়োগ দিতে সাবেক কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন : বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তাফা কামাল মুজেরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও সাবেক ডেপুটি গভর্নর নজরুল হুদা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব বদরে মুনির ফেরদৌস।

জানা গেছে, সার্চ কমিটি সোমবার (১৯ আগস্ট) বৈঠক করে কয়েকজনের নাম সুপারিশের জন্য একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে। এ তালিকায় এস আলম ঘনিষ্ঠ নির্বাহী পরিচালকের নাম রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, সার্চ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় সূত্রে কারও-কারও নাম আলোচনায় এসেছে। এস আলম ঘনিষ্ঠ কেউ ডেপুটি গভর্নর হলে তাঁরা তা মেনে নিবেন না। কেননা, এস আলম ঘনিষ্ঠদের রেখে ব্যাংক খাত কলঙ্কমুক্ত করা সম্ভব না।

ব্যাংকাররা জানান, বিভিন্ন ব্যাংক দখলে নিয়ে নামে-বেনামে বিপুল অংকের অর্থ বের করে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। এজন্য বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিয়ে ব্যাংক খাতে বড় একটি চক্র গড়ে তোলেন এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক দুই গভর্নর ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার নানা উপায়ে তাঁকে সহায়তা করেছেন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক, পরিচালকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা নানা সুবিধা নিয়ে তাঁর পক্ষে কাজ করেছেন। গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর পদত্যাগ করলেও এস আলম ঘনিষ্ঠ নির্বাহী পরিচালকসহ অন্যরা বহাল তবিয়তে আছেন। এখন তাঁরা ডেপুটি গভর্নর হওয়ার জন্য দৌঁড়ঝাপ করছেন।

সোমবার এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৬ ব্যাংকের ঋণ বিতরণে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।