টিআইবি : প্রভাবশালীদের কারণেই দুদক কর্মকর্তা শরীফ চাকরিচ্যুত কি-না?

টিআইবি : প্রভাবশালীদের কারণেই দুদক কর্মকর্তা শরীফ চাকরিচ্যুত কি-না?
ডন প্রতিবেদন : প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের চাপের কারণেই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে প্রশ্ন তুলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ নিয়ে তৈরি হওয়া ধোঁয়াশা দূর করার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়। গতকাল বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুদক কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ২০০৮-এর ৫৪(২) বিধি অনুযায়ী দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করেন। তিনি সর্বশেষ পটুয়াখালী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। টিআইবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামে কর্মরত অবস্থায় দক্ষতা ও সাহসের সঙ্গে কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণে বিশাল অঙ্কের দুর্নীতি, রোহিঙ্গা নাগরিকদের এনআইডি ও পাসপোর্ট জালিয়াতি, কর্ণফুলী গ্যাসে অনিয়মসহ বেশ কিছু আলোচিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযান ও মামলা পরিচালনায় মূল ভূমিকায় ছিলেন শরীফ উদ্দিন। এসব অভিযান ও মামলায় সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মধ্যে যাঁদের বিরাগভাজন হচ্ছিলেন এই কর্মকর্তা, তাঁদের চাপের কারণেই কি তাঁকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালী বদলি করা এবং সবশেষ চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, এমন প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে। টিআইবি বলছে, চাকরিচ্যুতি নিয়ে সংস্থার অভ্যন্তরে ও বাইরে বেশ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এর প্রতিবাদে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে দুদকের কর্মীদের অংশগ্রহণে মানববন্ধনের মতো ঘটনাও ঘটেছে। তা যেমন অভূতপূর্ব, তেমনি উদ্বেগজনক। টিআইবি মনে করে, চাকরিবিধি অনুযায়ী কোনো কর্মীকে অপসারণের এখতিয়ার দুদকের হাতে থাকতেই পারে, কিন্তু দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের মতো জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন দক্ষ ও সাহসী কর্মকর্তার সুরক্ষা নিশ্চিতের পরিবর্তে কেন এভাবে অপসারণের পথ বেছে নিতে হলো, তা দুদকের নিকট থেকে জানার অধিকার জনগণের রয়েছে। জনমনে তৈরি হওয়া এসব প্রশ্নের সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হলে দুর্নীতি দমনে কাজ করা সংস্থাটির বিশ্বাসযোগ্যতা গভীরতর সংকটের মুখে পড়বে বলে উল্লেখ করে টিআইবি সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে দুদকের অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানিয়েছে। তা না হলে দুর্নীতি দমনে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করা সৎ ও সাহসী কর্মকর্তারা উদ্যম হারিয়ে ফেলবেন, যা দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক অবস্থানকেই দুর্বল করে ফেলবে, যেটি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। দুদক এ বিষয়ে নিজেদের প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা দূর করবেন, এমনটাই প্রত্যাশা করে টিআইবি।