জয় : মেধা, শ্রম ও আত্মবিশ্বাস দিয়ে তরুণরাই এগিয়ে নেবে বাংলাদেশকে

জয় : মেধা, শ্রম ও আত্মবিশ্বাস দিয়ে তরুণরাই এগিয়ে নেবে বাংলাদেশকে

বাসস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি উপদেষ্টা এবং সিআরআইয়ের (সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন) চেয়ারপার্সন সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, মেধা, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস দিয়ে তরুণরাই বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

জয় শনিবার (১২ নভেম্বর) সাভারের শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে সিআরআইয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলার উদ্যোগে দেশের তরুণ সংগঠকদের ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

‘বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বর্তমান বিশ্বে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, তা বাংলাদেশের তরুণরা সমাধান করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। 

জয় বলেন, ‘আমার এই বিশ্বাসটাই আছে যে, বাংলার মানুষ, আমরা নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারি। আপনারা জানেন যে, এখন সারাবিশ্বেই অনেক সঙ্কট চলছে, যুদ্ধ চলছে, সমস্যা চলছে। এই একটি কোভিড মোকাবিলা করলাম আমরা দু বছর ধরে। কোভিড যেতে না যেতে এখন যুদ্ধ, সন্ত্রাস। আবার সবকিছুর দাম বেড়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক চাপ পড়ছে।’

তিনি প্রশ্ন তোলেন, অনেকেই এখন ভয়ে ভয়ে থাকে যে, এই সমস্যা আমাদের দেশ কীভাবে মোকাবিলা করবে? উত্তরে সজীব ওয়াজেদ জয়ই বলেন, ‘এই কথাটা কেনো বলছি এখানে। আপনারাই (তরুণ উদ্যোক্তারা) সেই সমস্যা সমাধানের উদাহরণ। দেখেন সমস্যার কোনোদিন শেষ থাকে না। এই ১৪ বছর যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, এর মধ্যে আমরা কী কী সমস্যা দেখেছি?  প্রথমেই ছিলো বিদ্যুতের সমস্যা। এই যে লোডশেডিং হয়, এটা আমরা কীভাবে সমাধান করবো? তারপর অর্থনীতির। এতো মানুষকে কীভাবে খাওয়ানো হবে। এই অর্থনীতিকে কীভাবে আগানো যায়? এগুলো আমরা সমাধান করে দেখিয়েছি। 

২০২০ সালে সারাবিশ্বে কোভিড মহামারির কথা উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আসলো কোভিড। এটা নিয়ে সবাই ভয়ে ছিলো। সবাই আতঙ্কে। সারাবিশ্বেই আতঙ্ক। তবে কী দেখা গেলো? আমরা বাংলাদেশে, নিজেদের মতো করে, নিজেদের পরিকল্পনায়, এই কোভিডকে কিন্তু বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের তুলনায় এমনকি সব থেকে ধনীর দেশের চাইতেও ভালোভাবে মোকাবিলা করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, আমার নিজেরই আনন্দ লাগে যে, যখন দেখি আমাদেরই দেশে আপনারা (তরুণরা) রোবোটিক হাত বানাচ্ছেন, এটা অসাধারণ। আমাদের দেশ থেকে আপনারা ক্লাইমেট চেঞ্জের জন্য দাবি করতে জাতিসংঘে প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন, এটা অসাধারণ। 

‘সবাই অসাধারণ কাজ করছেন’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা অসাধারণ। আমাদের দেশটি একটি অসাধারণ দেশ। নিজেরা লড়াই করে, রক্ত দিয়ে এই দেশকে আমরা স্বাধীন করেছি। এই ১৬ কোটি মানুষকে আমরা খাওয়াতে সক্ষম হয়েছি। এই ১৬ কোটি মানুষের দেশকে ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে দারিদ্র্য থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছি।’

‘তরুণদেরকে দেশের ভবিষ্যত’ উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আর এই তরুণ-তরুণীরা, এই ইয়াং বাংলার পুরস্কারজয়ীরা- আপনারাই হচ্ছেন ভবিষ্যৎ। আপনারা তরুণরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। আপনারাই বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। আমার আশা আছে, বিশ্বাস আছে, আপনারাই বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ থেকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করতে পারবেন। 

‘আর এটা আমাদের জীবনের মধ্যেই হবে।’ 

তিনি বলেন, আমরা নিজেদের পরিশ্রমে করবো। নিজেদের মেধা দিয়ে করবো, নিজেদের সমস্যা আমরা নিজেরাই সমাধান করবো। আসলে নিজের মধ্যে যদি আত্মবিশ্বাস থাকে, আর দেশপ্রেম থাকে, তাহলে কিন্তু নিজের দেশের জন্য সবকিছু করা, নিজের দেশের মানুষের জন্য সবকিছু করা সম্ভব।’ 

‘নিজের মধ্যে যদি দেশপ্রেম আর স্বাধীনতার চেতনা না থাকে, তাহলে দেশের ভালো আমি কীভাবে চাইতে পারি?’

‘তরুণরা ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে গড়ে তুলবেন, এগিয়ে নিয়ে যাবেন’ এ আশা ব্যক্ত করে জয় বলেন, আজকে একটি শব্দেই অনুভূতি জানাতে চাই যে, ‘অসাধারণ’। আজকে যাঁরা পুরস্কৃত হয়েছে, শুধু তাঁরাই নন, যাঁরা ফাইনালিস্ট এবং এই যে ৬ শ জন অংশ নিয়েছেন, আপনারা সকলেই আজকে বিজয়ী। 

পুরস্কারপ্রাপ্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আপনারা দেশের ও দেশের মানুষের জন্য যেভাবে সেবা করছেন, এটা আমাদের সকল নাগরিকের এবং বিশ্বের জন্য একটা উদাহরণ। আপনাদের মতো তরুণ-তরুণীরা নিজের প্রচেষ্টায় কারও কাছে হাত না পেতে নিজের মেধায়, নিজের চিন্তাধারায় কাজ শুরু করে দিয়েছেন, আপনারা কারও জন্য বসে নেই, এটাই হলো আমাদের চেতনা। এটাই আমাদের বিশ্বাস।’ 

বেলা ৩টা জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে ষষ্ঠবারের মতো জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান শুরু হয়। 

শুরুতেই ইয়াং বাংলার কার্যক্রম নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। 

এবার পুরস্কারের জন্য ৬ শতাধিক প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছিলো। তাঁদের মধ্য থেকে ২৮ জনকে চূড়ান্ত পর্বের জন্য বাছাই করা হয়। ৫টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হয় ১০টি প্রতিষ্ঠানকে। এ ছাড়া দুইজনকেও দেওয়া হয় আজীবন সন্মাননা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং সিআরআইয়ের ট্রাস্ট্রি নসরুল হামিদ বিপু। 

তিনি বলেন, দেখতে দেখতে ছয় বছর কেটে গেলো। আজকে ইয়াং বাংলার সদস্য সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ। তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে তাঁরা নিজেদের প্রচেষ্টায় অনেক কিছু করেছেন। 

অনুষ্ঠানে তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান।