জয়ের দৃষ্টিতে এক স্মৃতি জাগানিয়া অনুষ্ঠান মেডিসনে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’।

জয়ের দৃষ্টিতে এক স্মৃতি জাগানিয়া অনুষ্ঠান মেডিসনে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’।

বাসস : প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে আইসিটি মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ : মেলোডি ফর হিউম্যানিটি’ এক স্মৃতি জাগানিয়া অনুষ্ঠান।

১৯৭১ সালের বাংলাদেশের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সঙ্গীতশিল্পী জর্জ হ্যারিসনের ’কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ পরিবেশনা বাংলাদেশে পাকিস্তানি সৈন্যদের বর্বরতার ঘটনায় বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছিলো। অতিসম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সেই একইস্থানে আইসিটি মন্ত্রণালয় অনুরূপ একটি কনসার্টের আয়োজন করে।

‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামের এই অনুষ্ঠানে বিশ্বের সেরা রক তারকারা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। জয় বুধবার (১১ মে) তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, ১৯৭১ সালে হাজার হাজার মাইল দূরত্বের একটি দেশ তার লাল-সবুজ পতাকা রক্ষায় রক্ত ঝরাচ্ছিলো। আর বন্ধুর মুখে সেই দেশটির গল্প গভীরভাবে নাড়া দিলো বিশ্ব সঙ্গীতের ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় একজন শিল্পীকে।

‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিরস্ত্র মানুষ হত্যা, অসংখ্য নারীদের ধর্ষণ আর অনাহারে শিশুদের মৃত্যু তাঁকে মর্মাহত করলো। ঠিক তখনই কিছু কাব্যিক শব্দ একটি অবিস্মরণীয় গানের লিরিক আকারে ফুটে উঠলো : চোখ ভরা বিষাদ নিয়ে আমার বন্ধু আমার কাছে এসেছিলো, তাঁর দেশ শেষ হয়ে যাবার আগে পাশে দাঁড়ানো দরকার বলে আমাকে জানিয়েছিলো।’ জয় বলেন, মনে যা এসেছিলো, শুধু তাই দিয়ে গানটি রচনা করলেন না বিটলস-এর তারকা জর্জ হ্যারিসন। বরং ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস একটি গণহত্যার শিকার হওয়া বাংলাদেশের জনগণকে সাহায্য করার চিন্তায় মগ্ন তখন। ছুটে গেলেন বব ডিলান এবং এরিক ক্ল্যাপটনের মতো কিংবদন্তীদের কাছে। তাঁরাও বাংলাদেশকে সমর্থন জোগাতে সম্মত হন। আর বাকিটাতো ইতিহাস।

“‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ এর মাধ্যমে তাঁরা যুদ্ধের শিকার দেশকে সাহায্য করার নজির স্থাপন করেছে,’” বলেন জয়।

তিনি বলেন, যখনই আমি এটি ইউটিউবে দেখি, এটি আমাকে একটি সোনালী মুহূর্তে ফিরিয়ে নিয়ে যায়- জর্জ হ্যারিসন বাংলাদেশ গানটি গাইছেন, কানে ভাসছে বব ডিলানের 'হাউ মেনি রোডস অ্যা ম্যান মাস্ট ওয়াক ডাউন (কতোটা পথ পেরোলে বলো পথিক হওয়া যায়)’, ঝড়ের মতো তাঁর সেতারে সুর তুলছেন পন্ডিত রবিশঙ্কর। একই মঞ্চে সকল তারাদের মেলা! জয় জানান, গত সপ্তাহে তিনি সেই মুহূর্তটিকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন, বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তীতে আরেকটি কনসার্টের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন, তাঁদের সেই মানবতার জন্য এবং সঙ্গীত আয়োজন করার কারণে। ‘বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রকস্টার ও গানের সম্রাটরা যেমনটি স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাংলাদেশের স্বপ্ন সত্যি হলো। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ বিধ্বস্ত সেই দেশটি এখন টেকসই অগ্রগতি এবং উন্নয়নের একটি প্রতিকৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।’ ‘স্থাপত্যের দৃষ্টিনন্দন কর্মযজ্ঞ পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তির বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- এক অনুপ্রেরণার ইতিহাস রচনা করেছে বাংলাদেশ।’ তিনি বলেন, তবুও সব সাফল্যের গল্পের বিপক্ষে কতিপয় মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে বিরোধিতা করবেই। যুদ্ধাপরাধীদের প্রেতাত্মারা যাতে অন্ধকার অধ্যায় ফিরিয়ে আনতে না পারে, সেজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রতি আমাদের জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। এই সুবর্ণ জয়ন্তীতে সোনার বাংলার জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ‘আসুন, হ্যারিসনের বাংলাদেশ গানটি আরও একবার গাই এবং বিশ্ব আবারও শুনুক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়াই হলো এবারের সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমাদের প্রতিশ্রুতি। জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু!’