ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা সম্পর্কে বিএনপির ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা সম্পর্কে বিএনপির ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

বাসস : প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা জনগণের ভোটাধিকার নস্যাতের যে কোনও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, বিএনপি আবারও দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে চাইছে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন তাদের (বিএনপির) উদ্বেগের বিষয় নয়, কারণ তারা আবারও জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চাইছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার (পহেলা সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় শোক দিবস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত ‘সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনেই বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে ৩০টি আসন পেয়েছিলো- উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এ কথাটা জনগণকে মনে করিয়ে দিতে হবে যে, ওরা ভোট করতে আসে না এবং ভোটও পায় না। কারণ ওরা তো জঙ্গিবাদী, লুটেরা, সন্ত্রাসী। মানুষের শান্তি ও সম্পদ ওরা কেড়ে নেয়। মানুষের ঘরবাড়ি কেড়ে নেয়। ঘরবাড়ি কেড়ে নিয়ে সেখানে পুকুর কেটে কলাগাছ লাগিয়ে দিতেও আমরা তাদের দেখেছি। কাজেই লুটেরা, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদে বিশ্বাসীরা মানুষের কোনও কল্যাণ করতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারী ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাদের আইভী রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে তারা হেয় প্রতিপন্ন করেছে।

তিনি বলেন, ইলেকশন তাদের কথা নয়, তারা জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে আবার ছিনিমিনি খেলতে চায়। কারণ তাদের জন্মই হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাতে। তারা কখনও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে নি, তারা নাকি এখন গণতন্ত্র উদ্ধার করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের জন্ম মিলিটারি ডিক্টেটরের হাতে, মার্শাল ল’ দিয়ে তারা ক্ষমতা দখল করেছিলো। জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মধ্যদিয়ে ক্ষমতায় আসা সেই ক্ষমতাসীনদের হাতে তৈরি সংগঠন ওই বিএনপি।

সরকারপ্রধান বলেন, সংবিধানে যেখানে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করা নিষিদ্ধ ছিলো, সেই সংবিধান মার্শাল ল’ অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে সংশোধন করে যুদ্ধাপরাধী এবং পাকিস্তানের পাসপোর্টধারীদের যারা রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে, তারা এ দেশের কল্যাণ কোনোদিন চাইতে পারে না, তারা চায় না। তারা দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়। অন্যদিকে যখন আজকের এই বাংলাদেশ (উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে) এবং আওয়ামী লীগ যখন সরকারে এসেছে, তখনই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে।

ফেস্টুন, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড এবং জাতীয় ও ছাত্রলীগের পতাকা নিয়ে ছাত্রলীগের লোগো সম্বলিত টি-শার্ট ও ক্যাপ পরে সারাদেশ থেকে ছাত্রলীগের লাখ লাখ নেতাকর্মী সকাল থেকে ‘আবারো শেখ হাসিনা’ স্লোগান দিয়ে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে সমাবেশস্থলে সমবেত হতে থাকেন। দুপুরের পরপরই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, হাইকোর্ট এবং আশপাশের এলাকা মানব সমুদ্রে পরিণত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের প্রকাশনা মাতৃভূমি’র বিশেষ সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন।

বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাঁকে স্বাগত জানান।

বিশাল ছাত্র সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

মহাসমাবেশে শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিজেদের বর্তমানকে উৎসর্গ করার জন্য এবং আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রতীক নৌকার পক্ষে ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে বিজয়ী হওয়ার জন্য লাখো শিক্ষার্থীকে শপথ পাঠ করান ছাত্রলীগের সভাপতি।

এরপর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সমাবেশে বক্তব্য দেন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

কবিগুরুর কবিতার পংক্তি ‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’ উদ্ধৃত করে জাতির পিতার কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাঁর সেই আদর্শ নিয়েই পথ চলা।

তিনি বলেন, আমার কোনও ভয় নেই, দেশের মানুষকে ভালবাসি, স্বাধীনতার চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তুলবো। শেখ হাসিনা বলেন, আমার ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েরা ’৪১ এর স্মার্ট বাংলাদেশের কাণ্ডারি হবে। আমি সেটাই তোমাদের কাছে চাই। শুধু ’৪১ এ থেমে থাকবে না বাংলাদেশ, ২১০০ সালের জন্য ডেল্টা প্ল্যানও আমি করে দিয়ে গেছি। কাজেই এই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।

তিনি বলেন, অতন্ত্র প্রহরীর মতো ছাত্রলীগকে সব সময় সজাগ থাকতে হবে। সব থেকে বড় কথা শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি-ছাত্রলীগের মূলনীতি। এই নীতি মেনে ছাত্রলীগকে চলতে হবে।

‘আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের জন্য তার ছাত্রদলই যথেষ্ট’- খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রদলের মাধ্যমে ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। আর প্রধানমন্ত্রী ছাত্রদের হাতে তুলে দিয়েছেন কাগজ-কলম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অশিক্ষিত-মূর্খদের হাতে দেশ এগোতে পারে না। এরা মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে পাঠে মনোনিবেশ করে নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি তাঁর সরকারের করে দেওয়া সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার পরামর্শ দেন।

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন যারা চোখে দেখে না, তাদের তাঁর সরকারের করে দেওয়া জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে চক্ষু পরীক্ষা করানোরও পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি বলেন, যারা চোখ থাকতেও সরকারের উন্নয়ন চোখে দেখে না, তাদের উচিত ১০ টাকার টিকিট কেটে চোখ পরীক্ষা করানো। আসলে তাদের মনের দরজায় অন্ধকার। তারা পরাজিত শক্তির পদলেহনকারী। সেজন্য তারা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন দেখে না। হাওয়া ভবন খুলে খেতে পারছে না বলে তাদের যতো দুঃখ।

পেনশন নিয়ে অপপ্রচারের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কিছু নেতা বলছে পেনশন নাকি নির্বাচনি অর্থ সংগ্রহ করার জন্য। এর থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে। বিএনপি নিজেরা কিছু করতে পারে না, তাই অন্যের সাফল্য দেখতে পারে না। আমি ছাত্রলীগকে বলবো, তাঁদের দায়িত্ব নিতে হবে, মানুষকে বলতে হবে পেনশনের টাকা খোয়া যাবে না। মানুষের ভবিষ্যতের জন্য এই পেনশন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের ভালোর জন্য যখন আমরা কিছু করি, তখন তারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। এই বিভ্রান্তিতে কেউ যেনো কান না দেন।

বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রথম প্রয়োজন সঠিক নেতৃত্ব। সঠিক নেতৃত্ব ছাড়া রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। আমি আশা করি, ছাত্রলীগের নেতারা নিজেদের সেভাবে গড়ে তুলবে।

করোনা পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট মন্দার কথা উল্লেখ করে তিনি দেশের সকল অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জনসচেতনতা বাড়াতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে ফিক্সড ইনকামের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। প্রত্যেকে উৎপাদনে নজর দিলে কারো কাছে হাত পাততে হবে না। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে নিজেদের নগদ টাকায় কেনা খাদ্যশস্য আসতে দেয় নি, কৃত্রিম উপায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছিলো। সেই কথা মাথায় রেখে আমাদের প্রচেষ্টা- আমাদের খাদ্য আমরা উৎপাদন করবো। আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

ছাত্রলীগের গৌরবময় ঐতিহ্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্যই ছাত্রলীগের জন্ম। ছাত্রলীগ সব সময় আন্দোলন-সংগ্রামে গৌরবজনক ভূমিকা পালন করেছে। তাঁরা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছেষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বাগ্রে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর প্রথমে প্রতিবাদ করেছে ছাত্রলীগই। পঁচাত্তরের পর তিনি ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন দেশের বাইরে, নির্বাসনে। সেখান থেকে তাঁদের ফিরিয়ে আনার দাবিও ছাত্রলীগই প্রথম তুলেছিলো। যখন ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন, তখনই এই দাবি তাঁরা প্রথমে তোলেন। এরপর ২০০৭ সালে শেখ হাসিনা কারারুদ্ধ হলে, তখনও দাবি তুলে ছাত্রলীগ।

বিএনপি আমলের সন্ত্রাস-দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এসে হাওয়া ভবন খুলে খাওয়া শুরু করেছিলো। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। তিনি বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি, নিজের বা আমার ছেলে-মেয়েদের না। তাঁদের একটাই দিয়েছি, শিক্ষা। লোন নিয়ে তাঁরা পড়েছে। ধন-সম্পদ টাকাকড়ি কোনও কিছু কাজে লাগে না। করোনার সময় সবাই বুঝতে পেরেছে। আমি চাই, আমাদের ছেলেমেয়েরা উপযুক্ত ও যোগ্য হয়ে গড়ে উঠবে। তাঁরা অত্যন্ত মেধাবী। তাঁরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কারণে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হয়েছিলো- এমনটা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, একটি ব্যাংকের এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের ওপর অপবাদ চাপাতে চেষ্টা করেছিলো, যা আদালতে (কানাডার) মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তিনি (ড. ইউনূস) ১০ বছর (বয়স ৭০ হওয়ার পরও) বেআইনিভাবে ব্যাংকটি চালিয়ে আবারো সেখানে থাকতে হবে, সেই লোভে বার বার আমাদের ওপর চাপ দেওয়া হয়েছিলো। একটি বড় দেশ বার বার চাপ দিতো। বলতো এমডি পদে না রাখলে নাকি পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দেবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে সেই ভদ্রলোক (ড. ইউনূস) মামলাও করেছিলো। কিন্তু আদালত তো তার বয়স কমাতে পারে না, মামলায় হেরে যায়। অর্থায়ন বন্ধটা বিশ্বব্যাংকের বোর্ডে হয় নি। হিলারি ক্লিনটন নিজে অর্ডার দিয়ে তখন বিশ্বব্যাংকের চেয়ারম্যানকে দিয়ে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে। তখন বলেছিলাম, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করবো। কারো কাছে হাত পেতে নয়। আমরা সেটা করেছি। পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি, বাংলাদেশও পারে। এরপর কিন্তু বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বদলে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা মানবাধিকারের কথা বলে। ’৮১ সালে যখন আমি ফিরে এসেছি, তখন তো আমি মা-বাবা-ভাইবোন হত্যার বিচার চাইতে পারি নি। জিয়াউর রহমান খুনিদের ক্ষমতায় বসায়। প্রতি পদে পদে বাধা সৃষ্টি করেছিলো। কিন্তু কোনও বাধাই আমাকে আটকাতে পারে নি। আমি বাবার স্বপ্নপূরণ ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের প্রতিজ্ঞা করে দেশে এসেছি। মাঠের পর মাঠ হেঁটেছি। দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েছি। দেখতে চেয়েছি, এ দেশের মানুষের কী অবস্থা? আমার বাবা-মার রক্ত নিয়ে তারা দেশের কী করেছে?

এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’, ‘আমার দেখা নয়া চীন’ এবং ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টালিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দি নেশন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ সিরিজের বইগুলো পড়ার মাধ্যমে জাতির পিতার চিন্তা-চেতনা, রাজনীতি, ব্যক্তিজীবন এবং দেশের ইতিহাস সম্পর্কে সঠিক তথ্য আহরণের অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।

সমাবেশের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত, ছাত্রলীগের থিম সং এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করে একটি গান গাওয়া হয় এবং এলইডি মনিটরে জাতির পিতাকে উৎসর্গ করা আরেকটি গান প্রদর্শিত হয়। মহাসমাবেশের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।