জঙ্গিদের টার্গেটে সাংবাদিকেরা! : এক সাংবাদিককে আক্রমণ!

জঙ্গিদের টার্গেটে সাংবাদিকেরা! : এক সাংবাদিককে আক্রমণ!

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে মরণ কামড় দিতে চায় জঙ্গিরা। তবে তাদের এমন কর্মকাণ্ডে বাধা পড়ছে সাংবাদিকদের তথ্য প্রদান। জঙ্গিরা যখনই বড় ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড কিংবা ছোট নাশকতাও করতে চায়, তার আগেই তা জানিয়ে দিচ্ছেন সাংবাদিকেরা। এটা আগে থেকেই হয়ে আসছে। সবচেয়ে বড় কথা বর্তমান সরকারেরই রয়েছে জঙ্গি দমনে শূন্য সহনীয় (জিরো টলারেন্স) নীতি। মূলত এ নীতির কারণেই সরকার বদলের আন্দোলন থেকে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায় জঙ্গিরা। এক্ষেত্রে সরকার এবং সাংবাদিকদের বিরোধী মনে করছে তারা। যেখানে জঙ্গিরা সাংবাদিকদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে বলেই অনুসন্ধানে জানা গেছে। এক্ষেত্রে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে এক সাংবাদিকের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেছেন, জঙ্গিদের কোনও ধরনের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।

সূত্র জানায়, যেসব সাংবাদিক জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকেন, তাঁদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে জঙ্গিরা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে (মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর প্রথম প্রহর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার বুড়িগঙ্গা সিএনজি ফিলিং স্টেশনে এক সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ওই হামলা যে সাংবাদিকের ওপর করা হয়েছে, তিনি জঙ্গিবিরোধী প্রতিবেদন করে থাকেন। ওই ঘটনাকে পরিকল্পিত বলেই জানিয়েছেন ওই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।

তিনি বাঙলার কাগজ ও ডনকে জানান, পাম্পের কর্মচারীদের ম্যানেজ করার মাধ্যমে কয়েকজন সন্দেহভাজন লোকজন, তাদের জঙ্গি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি- তারা বুড়িগঙ্গা সিএনজি ফিলিং স্টেশনে রাতে অবস্থান করছিলো। যেহেতু রাত ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সিএনজি পাম্পগুলোতে সরকারি নির্দেশনায় গ্যাস দেওয়া হয় না, তাই ওই সাংবাদিক তাঁর বাসা থেকে রওয়ানা হয়ে রাত ১২টার সময় মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার বুড়িগঙ্গা সিএনজি পাম্পে পৌঁছান। আর ওই সাংবাদিক তাঁর নিজের গাড়িতে গ্যাস নিতে যাবার পর তাঁর সঙ্গে থাকা (৪ জন) ব্যক্তিদের উসকানিমূলক কথা বলে ঝামেলা পাকিয়ে ওই সাংবাদিককে মুখে ঘুষি মেরে আহত করেন একজন সন্দেহভাজন জঙ্গি। পরে ওই সাংবাদিক পুলিশের স্মরণাপন্ন হওয়ার পর গ্যাস পাম্পের লোকজন পুলিশকে ভুল বুঝিয়ে ওই সাংবাদিকের কাছ থেকেই মুচলেকা নেয়। অথচ পাম্পের লোকজন জঙ্গিদের সঙ্গে মিলে সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা লোকজনকে পিটিয়েছে এবং সাংবাদিককেও মুখে ঘুষি মেরেছে। ঘটনার ব্যাপারে জঙ্গিরা পাম্পের লোকজনের সঙ্গে মিলে পুলিশকে একটি কথাই বলে, ‘তারা মাতাল হয়ে পাম্পে এসেছে, আর এখানে এসে খারাপ আচরণ করছিলো।’ এক্ষেত্রে তাদের কথাও যদি সত্যি হয়, তাহলেও সাংবাদিক এবং সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা লোকজনদেরকে তাদের পেটানোর কথা নয়। এ ব্যাপারে তারা অন্য ব্যবস্থা নিতে পারতো, যদি সত্যিই তারা খারাপ আচরণ করে থাকতো, তাহলে বলতে পারতো যে, আপনাদেরকে গ্যাস দেওয়া হবে না। এরপর আবার যদি সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা লোকজন বলতো যে, আমাদেরকে গ্যাস দেন বা দিতে হবে, কেনো দেবেন না? তখন প্রয়োজন হলে পাম্প কর্তৃপক্ষকে পাম্পের কর্মচারীরা বিষয়টি জানাতে পারতেন। অথচ সেটি না করে সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা লোকজন এবং সাংবাদিককে মারধর করে আহত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠ ওই সাংবাদিকের ঠোঁট ফেটে গিয়ে তিনি রক্তাক্ত হয়ে পড়েন।

ওই সাংবাদিক আরও জানান, অথচ ওই সাংবাদিক এবং তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন পাম্পে গ্যাস নিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এবং নিজেদের মধ্যেই কথা বলছিলেন। তখন ২৫-২৬ বছর বয়স হবে একজন খাটো করে ব্যক্তি (তার জঙ্গি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি) এসে বলেন, এই এখানে তোরা মাতলামি করছিস কেনো? তখন সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা লোকজন বলেন, আমরা কোথায় মাতলামি করলাম, আমরা গ্যাস নিতে এসে দাঁড়িয়ে নিজেরা নিজেদের সঙ্গে কথা বলছি এবং গাড়ি সিরিয়ালে আছে। এ সময় পাম্পের একজন ব্যক্তি এসে ওই জঙ্গি ধাচের ব্যক্তিটির সঙ্গে যোগ দেন এবং সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে ঝগড়া বাধিয়ে দেন। কিন্তু সাংবাদিক ওই ঝগড়া থামাতে গিয়ে দুইপক্ষকে দুইদিকে সরিয়ে দেওয়ার সময় ওই জঙ্গি ধাচের লোক এবং পাম্পের গ্যাস দিতে থাকা কর্মচারীকে শরীরে ধরে অন্যদিকে সরাতে চাইলেই ওই ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং জঙ্গি ধাচের লোকটি সাংবাদিকের মুখে ঘুষি বসিয়ে দেন। তখন পাম্পের ওই লোকটির সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন লোকজন এসে সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা লোকজন এবং সাংবাদিককে মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা দুইজন লোক পালিয়ে যান, আর সাংবাদিককে পাম্পের লোকজন পাম্পের মধ্যে নিয়ে বসিয়ে রাখেন এবং জেরা করতে থাকেন। তখন একজন লোক এসে সাংবাদিকের গায়ে হাতও তোলেন। পরে মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ আসার পর সাংবাদিকের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁকে ছাড়েন।

এ ব্যাপারে জ্যেষ্ঠ ওই সাংবাদিক বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, সন্দেহভাজন তথা জঙ্গিদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরসার সঙ্গে মিলে অরাজকতা তৈরি করতে চায় জঙ্গিরা! : সম্প্রতি টেকনাফে কয়েকজন কৃষকের গুম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ৮ জন কৃষককে গুম করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবারের কাছে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা করে চেয়েছে দুর্বৃত্তরা। যেখানে আরসার সঙ্গে জোট বেধে এ কাজ করতে পারে জঙ্গিরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এমনটাই বলছে।

সূত্রমতে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে কোনও উপায়ে অর্থ হাতিয়ে নিতে চাইছে জঙ্গিরা। এক্ষেত্রে তাদের মূল উদ্দেশ্য নাশকতার জন্য বিভিন্ন জিনিস ক্রয় করা এবং জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে টার্গেট করে ভীতি সঞ্চারের চেষ্টায়ও রয়েছে জঙ্গিরা। ফলে সূত্রগুলো আরও বলছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিভিন্ন সন্দেহজনক ঘটনাকে খালি চোখে না দেখে বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখলে জঙ্গিদেরকে সহজেই ধরা সম্ভব হবে এবং তারা কোনও ধরনের অপকর্ম করার সুযোগ পাবে না।

সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে সবগুলো জঙ্গি সংগঠন একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিতে চাইছে। এরই মধ্যে এ ধরনের পোস্টারও ছেপেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন- হিযবুত তাহ্‌রীর।