কালাম আঝাদ’র কলাম : কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করুন।

কালাম আঝাদ’র কলাম : কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করুন।

সম্পাদকীয় মত, বাঙলা কাগজ : ২০১৩ সালের ৫ মে’র কথা আমাদের মনে আছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক অপব্যবহারের উদাহরণ এর চেয়ে বড় হতে পারে না। এরপর আমরা দেখে আসছি, যে কোনও রাজনৈতিক দল বিশেষ করে ইসলামিক দল হলে তো কথাই নেই, তাঁরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে আসছে। গত কয়েকদিন আগেও আমরা দেখেছি, একটি ইসলামিক দল- মাদরাসা থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তাঁদের কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য করেছে। আবার একজন জনপ্রতিনিধি শিক্ষার্থীদের ঘাড়ের উপর দিয়ে হেঁটে পার হওয়ার ঘটনাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সুতরাং এমন অবস্থায় সাধারণ শিক্ষায় এসএসসি এবং মাদরাসা শিক্ষায় দাখিল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করুন।

বর্তমানে কয়েকটি দেশে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ হচ্ছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, অনেকেই ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছেন। এক্ষেত্রে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকেও ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি গতকাল ঢাকায়ও একটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করানো হয়েছে। কিন্তু এটা কি তাঁদের আন্দোলন বা বিক্ষোভ করার সময়? অনেকে বলবেন, যখন সড়ক নিয়ে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা, তখন তাঁদের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন কেনো? এর উত্তর হলো, সেটি তাঁদের অধিকার আদায়ের জন্য। আর অন্য বিষয়গুলো হয় ধর্মের জন্য, না হয় রাজনীতির। সুতরাং এসব বিষয়ে তাঁদের জড়ানো কোনোভাবেই উচিত নয়।

আরেকটি বিষয় দেখা যায়, ধর্মভিত্তিক দলগুলো শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম থেকে বিক্ষোভ-মিছিল বের করে। এতে অনেক সময় সাধারণ মানুষ কিছু না বুঝেই তাঁদের কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে গিয়ে ঝামেলায় পড়ে। সুতরাং সাধারণ মানুষকে ঝামেলায় ফেলা তো কোনোভাবেই উচিত নয়।

অনেকেই আমাকে বলছেন, স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামায়াত-শিবির ভারতের ঘটনায় বড় বড় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। এক্ষেত্রে আমি বলবো, তারা যেসব কর্মসূচি করেছে, সেগুলো হয় মসজিদ থেকে করেছে; না হয় মাইকিং করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের একত্র করে সবার সামনে একটি ব্যানার দিয়ে দিয়েছে, ফলে দেখা গেছে এতো এতো লোক জামায়াতের বা এতো এতো লোক এই দলের। আসলে কিন্তু তা নয়। কারণ এটি ধর্ম নিয়ে বলেই, ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ এক হয়েছিলেন।

সর্বোপরি, মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থীর বয়স হয় ১৫ বা ১৬ বছর। তখন তিনি প্রাপ্তবয়স্কও হন না। তাহলে এসএসসির আগে কীভাবে একজন শিক্ষার্থীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা উচিত? সবমিলিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের কথা বিবেচনায় এনে এসএসসি বা দাখিল পর্যন্ত তাঁদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দিন।