উদয়পুরে আদালতে দরজির খুনিদের ওপর জনতার হামলা।

উদয়পুরে আদালতে দরজির খুনিদের ওপর জনতার হামলা।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : ভারতের উদয়পুরে কানহাইয়া লাল নামের এক দরজিকে হত্যার দুই আসামিকে শনিবার (২ জুলাই) জয়পুর আদালতে নেয় পুলিশ। সেখানে তাদের ওপর হামলা করে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। আদালতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও টানাহেঁচড়ায় আসামিদের কাপড় ছিঁড়ে ফেলে হামলাকারীরা।

পরে পুলিশের তৎপরতায় আসামিদের একটি ভ্যানে তুলে সেখান থেকে কারাগারে পাঠানো হয়। এনডিটিভি।

গত মঙ্গলবার (২৮ জুন) উদয়পুরে কানহাইয়া লাল নামের ওই ৪৮ বছর বয়সী ব্যক্তিকে খুন করা হয়। সে হত্যাকাণ্ডের ভিডিও করেন দুজন প্রত্যক্ষদর্শী।

পরে দুই হত্যায় অংশ নেওয়া রিয়াজ আখতারি এবং গোস মোহাম্মদ আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সে ভিডিওতে দেখা যায়, কানহাইয়া লালকে হত্যার বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে। সেসঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে হুমকি দেয় তারা।

হত্যার কয়েক ঘণ্টা পর আখতারি ও মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয়। কানহাইয়ার দোকানের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহকারী আরও দুজনকে পরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ দাবি করে, তারাও হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলো।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত ৪ জনকে শনিবার জয়পুরের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) আদালতে পাঠানো হয়। সে সময় আদালত প্রাঙ্গণে কঠোর পুলিশি ব্যবস্থা ছিলো। কয়েকজন আইনজীবী ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’ এবং ‘কানহাইয়ার খুনিদের মৃত্যুদণ্ড দাও’ স্লোগান দেন।

মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা বিজেপির বরখাস্ত মুখপাত্র নূপুর শর্মার পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় খুন হন উদরপুরের দরজি কানহাইয়া লাল। তাঁর শিরশ্ছেদ করার চেষ্টা চালায় গোস মোহাম্মদ ও রিয়াজ আখতারি নামের ওই দুই যুবক। কানহাইয়ার শরীরে ২৬টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিলো।

এনডিটিভির আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, কানহাইয়া লাল হত্যাকাণ্ডের আগে দেশটির মহারাষ্ট্র রাজ্যে এক সন্ত্রাসবিরোধী রসায়নবিদকে গলাকেটে হত্যা করা হয়। সে ঘটনাটিও এখন সামনে এসেছে। সরকার সে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়ার দাবি করেছে। যার তদন্ত চলছে।

মহানবী (সা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা বিজেপির মুখপাত্র নুপুর শর্মার মন্তব্যকে সমর্থন করায় ওই রসায়নবিদকে খুন করা হয় বলেই দাবি করা হয় সে প্রতিবেদনে।

বিজেপি বলেছে, উমেশ কোলহে নামে অরেক ব্যক্তি কানহাইয়া লালের মতো নূপুর শর্মার সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন। মহানবী (সা.) সম্পর্কে এমন মন্তব্য দেশব্যাপী প্রতিবাদ এবং বিশ্বব্যাপী নিন্দার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

শনিবার (২ জুলাই) আদালত এনআইএ’র কাছে ১২ জুলাই পর্যন্ত খুনিদের হেফাজত মঞ্জুর করেছে।