আদালতে ৬০ বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট এলো পুলিশের জন্য

আদালতে ৬০ বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট এলো পুলিশের জন্য

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার পর থেকে ঢাকার আদালত চত্বরের নিরাপত্তা জোরদারে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আদালতের হাজতখানায় যুক্ত হয়েছে ৬০টি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট। বড় সন্ত্রাসী কিংবা জঙ্গি আসামি আনা-নেওয়ার সময় এখন থেকে পুলিশের সদস্যরা বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরবেন।

পুলিশ সূত্র বলছে, তাঁদের ৩০টি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও ৩০টি হেলমেট দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) জসিম উদ্দিন বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘দুই জঙ্গি আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার পর থেকে আমাদের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা আরও অনেক বেশি সতর্ক।’

আদালতে আরও দেখা গেছে, আসামি আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) সকাল থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত আদালত চত্বরে ভ্রাম্যমাণ কোনও দোকানপাট বসতে দেওয়া হয় নি। আগে আদালতে ঢোকার প্রবেশপথের ফটক পুরোপুরি খোলা থাকতো। তবে গতকাল সোমবার থেকে পকেট দিয়ে জনগণ ঢুকছেন। এমনকি কোনও ধরনের যানবাহনও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার পর থেকে আদালতে পুলিশের উপস্থিতি বেশি দেখতে পাচ্ছি। এ ধরনের নিরাপত্তা যদি সারা বছর থাকে, তাহলে বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী অনেক উপকৃত হবেন। জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়া কিংবা অন্য কোনও ঘটনা ঘটার আশঙ্কা কমে যাবে।’

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাকিম বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘আমরা আগের থেকে অনেক সতর্ক।’

গত রোববার (২০ নভেম্বর) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল থেকে জঙ্গিদেরকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিলেন পুলিশের সদস্যরা। প্রধান ফটকের সামনে তখন হাতকড়া পরা দুই জঙ্গি তাদের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশের এক সদস্যকে মারধর শুরু করেন। মুহূর্তের মধ্যে আশপাশে থাকা জঙ্গিদের সহযোগীরাও পুলিশের ওপর হামলায় যোগ দেয়।

পুলিশের ওই সদস্যকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য। তাঁদের ওপর হামলা এবং স্প্রে ছিটিয়ে সিজেএম আদালতের প্রধান ফটকের উল্টো দিকের গলি দিয়ে মোটরসাইকেলে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেয় সহযোগীরা।

তারা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এ ছাড়া আরও কয়েকটি হত্যা মামলার আসামি তারা। এসব লেখক, প্রকাশক ও ব্লগার হত্যা মামলার প্রধান আসামি আনসার আল ইসলামের নেতা মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় ১০ আসামির ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা এখন পুলিশি হেফাজতে আছে।