বাংলাদেশ মাতালেন এ আর রাহমান।

বাংলাদেশ মাতালেন এ আর রাহমান।
ডন প্রতিবেদন : অসাধারণ যাদুকরি সুরে বাংলাদেশ মাতালেন উপমহাদেশের জনপ্রিয় সুরকার, সংগীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী এ আর রাহমান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব হানড্রেড’ অনুষ্ঠানে গান গেয়ে মুগ্ধ করেছেন অস্কারজয়ী এই সংগীত পরিচালক। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত অবধি সরাসরি বা টেলিভিশনের কল্যাণে অস্কারজয়ী এই শিল্পীর সুর ছুঁয়ে গেছে অসংখ্য দর্শক-শ্রোতার হৃদয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আয়োজিত ও বসুন্ধরার পৃষ্ঠপোষকতায় এই মেগা কনসার্টের দ্বিতীয় পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সংগীত উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। মিরপুরের শেরে-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কনসার্টে এ সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ও সাংসদ নাজমুল হাসান পাপন, বিসিবি কর্মকর্তা ইসমাইল হায়দার মল্লিক ও শেখ সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শুরু হয়। এরপর মঞ্চে আসে জনপ্রিয় ব্যান্ডদল মাইলস। ‘চাঁদ তারা সূর্য নও তুমি/নও পাহাড়ি ঝরনা/যদি বলি ফুল তবুও হবে ভুল/তোমার তুলনা হয় না’- নব্বই দশকের সুপারহিট এই গান দিয়ে শুরু করে মাইলস। অন্যতম দেশসেরা এই ব্যান্ডদল তাঁদের বিখ্যাত আরও কয়েকটি গান পরিবেশন করে মাতিয়ে তোলে দর্শকদের। উপস্থাপক রুমানা মালিক মুনমুন মাইলসের পরিবেশনার পরই সাংসদ ও জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান। মমতাজ শুরু করেন তাঁর নতুন গান ‘জয় মুজিবুর, জয় স্বাধীনতা, বাংলাদেশের জয়’ গানটি দিয়ে। এরপর একে একে গেয়ে শোনান ‘না জানি কোন অপরাধে দিলা এমন জীবন’, ‘আমার ঘুম ভাঙাইয়া গেলো গো মরার কোকিলে’, ‘নান্টু ঘটকের কথা শুইনা’ এবং ‘বন্ধু তুই লোকাল বাস’-এর মতো মঞ্চ মাতানো গানগুলো। তখন বহু দর্শক বিপুল উত্সাহে গলা মেলান তাঁর সঙ্গে। দর্শক প্রবল আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলো অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে আয়োজনের মধ্যমণি এ আর রাহমান ও তাঁর দলের জন্য। তবে বেরসিক বৃষ্টি বাগড়া দিয়ে দর্শকদের ধৈর্যের ভালোই পরীক্ষা নিয়েছে। বৃষ্টিজনিত বিরতি শেষে এ আর রাহমান সদলে আলো ঝলমলে মঞ্চে এলে বাঁধভাঙা আনন্দে মাতে দর্শক। একের পর এক মনোপ্রাণ ভরানো গানে এই জীবন্ত কিংবদন্তিও যেনো তাঁদের ভালোবাসা আর মুগ্ধতার প্রতিদান দেন। এ আর রাহমান এবার দ্বিতীয়বারের মতো এসেছেন বাংলাদেশে। এর আগের বারও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আমন্ত্রণে এসেছিলেন তিনি। বিসিবির উদ্যোগে ‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব হানড্রেড’ শীর্ষক এ বারের আয়োজন ২০২০ সালেই হওয়ার কথা ছিলো। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তখন আসতে পারেন নি রাহমান। দুই বছর পর এলেন এবং জয় করলেন বরাবরের মতোই। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত এ আর রাহমান ও তাঁর সহশিল্পীরা গান গেয়ে দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীসহ বিশিষ্ট অতিথি ও দর্শক-শ্রোতারা চমৎকৃত হয়ে উঠেন তাঁর ‘জয় জয় জয় বাংলাদেশ’গানে। এ আর রাহমানের পরিবেশনার সময় এক সময় মঞ্চে আসেন আরেক বিশিষ্টজন হরিহরণ। এতে দর্শক তখন পান প্রায় মধ্যরাতে আরেক চমক। ডিজিটাল প্রযুক্তির কল্যাণে মঞ্চের পর্দায় ‘আবির্ভূত হন’ সম্প্রতি প্রয়াত সংগীত কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকরও। তাঁর রেকর্ড করা কণ্ঠেরসঙ্গে গলা মেলান এ আর রাহমান। সৃষ্টি হয় সুরের ঐন্দ্রজালিক আবহ। আর গিটার বাজিয়ে গান করেন শিল্পী রশিদ আলী। নারী শিল্পীদের সঙ্গে অসাধারণ ছিলো যন্ত্রসংগীতের পরিবেশনাও।