ডন প্রতিবেদন : কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম ইকবাল হোসেন। বাবার নাম নূর আহমেদ আলম। বাড়ি কুমিল্লা নগরের সুজানগর এলাকায়।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ইকবাল হোসেনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, ‘পুলিশের একাধিক সংস্থার তদন্তে এই অগ্রগতি হয়েছে। ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
এই ইকবালকে গ্রেপ্তারে গত কয়েকদিন ধরে চলছে জোর অভিযান। ইকবালের সহযোগী হিসেবে অন্তত চারজন এরইমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মনে করছে, ইকবাল গ্রেপ্তার হলেই এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
দুর্গাপূজায় সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের ওই মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা।
ওই মণ্ডপের পাশাপাশি আক্রান্ত হয় নগরীর আরও বেশকিছু পূজামণ্ডপ। পরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুর, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়। ওইদিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা করতে যাওয়া একদল ব্যক্তিরসঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সেখানে নিহত হন চারজন। পরদিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় নিহত হয়েছিলেন দুইজন। এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু বসতিতে হামলা করে ভাঙচুর, লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। হিন্দুদের মন্দির-মণ্ডপসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা হয়েছে দেশের আরও অনেক এলাকায়।
পূজার আয়োজক, এলাকাবাসী এবং তদন্তকারী কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদেরসঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার আগের রাত আড়াইটা পর্যন্ত মন্দিরে পূজাসংশ্লিষ্টদের উপস্থিতি ছিলো। এরপর বুধবার (১৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দুজন নারী ভক্ত মণ্ডপে এসে হনুমানের মূর্তিতে প্রথম কোরআন শরিফটি দেখতে পান।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, পবিত্র কোরআন শরিফটি পূজামণ্ডপে রাখার পর হনুমানের গদা কাঁধে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে ইকবাল হোসেন।। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে সময়টি রাত তখন ৩টা ১২ মিনিট। এর আগে সিসিটিভির ফুটেজ অনুযায়ি, রাত ২টা ১০ মিনিটে পূজামণ্ডপে কোরআন রাখার জন্য যান ইকবাল হোসেন।