ইউনিসেফ : কোভ্যাক্সের আওতায় ১৯ কোটি করোনার টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : কোভ্যাক্সের আওতায় এক বছরে বাংলাদেশকে ১৯ কোটিরও বেশি করোনার টিকা সরবরাহ করেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ। সংস্থাটির তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত কোভ্যাক্সের আওতায় সবচেয়ে বেশি টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
কোভ্যাক্স হচ্ছে এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশন, ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স-গাভি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বাধীন একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর বিশ্বের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে টিকা সরবরাহে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো। এর আওতায় টিকা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ইউনিসেফ।
মঙ্গলবার (৩১ মে) ইউনিসেফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত যতো করোনার টিকা পেয়েছে, তার ৬২ শতাংশেরও বেশি পেয়েছে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে।
বাংলাদেশে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে করোনার টিকাদান শুরু হয়। ইউনিসেফ বাংলাদেশে প্রথম কোভ্যাক্সের টিকা সরবরাহ করে ২০২১ সালের পহেলা জুন। এমন একসময়ে এই টিকা সরবরাহ করা হয়, যখন দেশের মাত্র ৪ শতাংশ জনগোষ্ঠী সম্পূর্ণরূপে টিকা পেয়েছিলো। এর এক বছর পর সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য অংশীদারের মধ্যে একটি শক্তিশালী অংশীদারত্বের কল্যাণে বাংলাদেশ ১১ কোটি ৭০ লাখ মানুষকে দুই ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে। যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৬৯ শতাংশ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় সংকল্প এবং অবিচল নেতৃত্বে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ আশ্চর্যজনক সক্ষমতা দেখিয়েছে। টিকার নিরবচ্ছিন্ন প্রাপ্যতা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিশ্রমের কারণে আমরা টিকা নষ্ট না করেই সারাদেশের মানুষের কাছে তা পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি।’
ইউনিসেফ জানিয়েছে, টিকা ব্যবস্থাপনায় কোল্ড চেইন এবং আলট্রা-কোল্ড চেইন ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ পৌঁছে দেওয়া, চাহিদা তৈরি করা, উপাত্ত ব্যবস্থাপনায় সহায়তা প্রদান এবং টিকাদানের জন্য সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমেও তাঁরা সরকারের কোভিড-১৯ মোকাবিলা কার্যক্রমে সহায়তা দিয়েছে। এই বিনিয়োগগুলো কোভিড-১৯ সঙ্কটের পর সামনের বছরগুলোতেও বাংলাদেশের মানুষকে অব্যাহতভাবে সেবা দিয়ে যাবে। এগুলো শিশুদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যারা হাম ও পোলিওর মতো প্রাণঘাতী রোগপ্রতিরোধে টিকা নিয়েছে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং টিকার ন্যায়ভিত্তিক সরবরাহ বজায় থাকলে কী অর্জন করা যেতে পারে, বাংলাদেশের কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণ এবং টিকাদান অব্যাহত রাখার সক্ষমতাই তার প্রমাণ। দ্রুততার সঙ্গে এবং নিরাপদে দেশের প্রতিটি কোনায় কোনায় লাখ লাখ মানুষের হাতে টিকা প্রয়োগ অসম্ভবের চেয়ে কম কিছু নয়।
জুনে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার একটি ক্যাম্পেইন পরিচালনার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলেই জানিয়েছে ইউনিসেফ।
বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি বারদান জং রানা বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানিয়েছেন, আগামী জুনের মধ্যে ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকাদানের যে বৈশ্বিক টার্গেট, তা অর্জনের খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে বাংলাদেশ। কোভ্যাক্সের সহায়তা ছাড়া এই সাফল্য সম্ভব হতো না। টিকাদানের চলমান গতি বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা হিসেবে কোভিড-১৯-এর সমাপ্তি দেখার অনুপ্রেরণা জোগায়।