৭৩০ কোটি টাকা ব্যয় : তবুও ৩ ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ডুবলো ঢাকা
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : বছরের পর বছর যায়, মন্ত্রী-মেয়রের পরিবর্তন হয়, কিন্তু বৃষ্টির মৌসুমে রাজধানী ঢাকার জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির তেমন কোনও উন্নতি হয় না। টানা কিছুক্ষণ ভারী বৃষ্টি হলে ঢাকার কোনও না কোনও এলাকা ডুববে—এটি যেনো নিয়ম হয়ে গেছে। অথচ গত চার বছরে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসনে কমপক্ষে ৭৩০ কোটি টাকা খরচ করেছে। কিন্তু এর সুফল কতটা পাওয়া গেছে, তা শুক্রবার সকালের তিন ঘণ্টার বৃষ্টি দেখিয়ে দিয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এদিন সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ৬০ মিলিমিটার। এরপরও অবশ্য হয়েছে, তবে তা ভারী বৃষ্টি ছিলো না। কিন্তু সকালের বৃষ্টিতেই ধানমন্ডি, গ্রিন রোড, নিউমার্কেট, মতিঝিল, আরামবাগ, কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, দক্ষিণখান, কল্যাণপুর, বিজয় সরণি, মালিবাগ, মৌচাকসহ রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকার সড়ক ডুবে যায়। অনেক বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। কোথাও পানি ছিলো হাঁটুসমান, কোথাও প্রায় কোমরসমান।
তবে সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় এদিন সড়কে যানবাহন ও মানুষের চাপ কম ছিলো। কিন্তু ডুবে যাওয়া সড়কের বিভিন্ন অংশে বিকল হয়ে পড়ে ছিলো সিএনজিচালিত অটোরিকশা, বাস ও প্রাইভেট কার। যে কারণে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ ঢাকাবাসীকে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য হাতে সময় নিয়ে বের হওয়ার অনুরোধ জানায়। গণমাধ্যমে প্রচারের জন্য ডিএমপির বার্তায় বলা হয়, প্রচণ্ড বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ডুবে গিয়ে রাস্তায় অনেক গাড়ি বিকল হয়ে যানজটের সৃষ্টি করেছে।
পুলিশ তাদের বার্তায় দুপুরে বৃষ্টিতে ডুবে যাওয়া রাজধানীর ২২টি এলাকার কথা উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ফকিরাপুল, নয়াপল্টন, শান্তিনগর, বায়তুল মোকাররম, মালিবাগ মোড়, আরামবাগ, প্রগতি সরণি, নিউমার্কেট, ধানমন্ডির রাপা প্লাজা, বংশাল, মিরপুর রোকেয়া সরণি, দয়াগঞ্জ মোড়, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, নিমতলী, টয়েনবি সার্কেল রোড, ধানমন্ডি ২৭, এলিফ্যান্ট রোড, মৎস্য ভবন, কারওয়ান বাজার, বিজয় সরণি, ঢাকা গেট ভিআইপি রোড ও মিরপুর মাজার রোড।
ডুবে যাওয়া সড়কের ছবি ও ভিডিওর সঙ্গে নানা ধরনের মন্তব্য লিখে ফেসবুকে পোস্ট দেন অনেকে। এ রকম একটি পোস্টে মাহমুদ সুজন নামের একজন জলাবদ্ধতার ছবি দিয়ে লেখেন, ‘শান্তিনগর হয়ে উঠেছে বুড়িগঙ্গা নদী।’ তাঁর দেওয়া ছবির নিচে একজন লিখেছেন, ‘শাহজাহানপুরেরও একই অবস্থা’।