ডন প্রতিবেদক, কক্সবাজার : কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় আরও ৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। রবিবার (১০ অক্টোবর) পঞ্চম দফায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দা এক গৃহবধূ ও সেনাবাহিনীর ৫ সদস্যের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পিপি ফরিদুল আলমসহ তিনজন আইনজীবী। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সাক্ষীদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। আদালত পরিচালনা করেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।
সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন সিনহা হত্যা মামলার প্রধান আসামি টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ১৫ আসামি।
আইনজীবীরা বলেন, সকাল ১০টায় বেবী বেগমকে দিয়ে শুরু হয় আদালতের বিচারকাজ। বেবী বেগমের বাড়ি টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল গ্রামে। সাক্ষ্যে বেবী বেগম বলেন, ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে কয়েকজন আসামি তাঁর বাড়ি থেকে বিয়ের উপযুক্ত মেয়েকে তুলে নিয়ে টেকনাফ থানার দ্বিতীয়তলার একটি কক্ষে চার-পাঁচ দিন আটকে রাখেন এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে খারাপ কাজ করেন। যে কারণে মেয়েটি বাড়িতে ফিরে বারবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। এ ব্যাপারে তিনি কক্সবাজারের আদালতে ওসি প্রদীপসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এরপর সাক্ষ্য দেন সেনাবাহিনীর পাঁচ সদস্য। তাঁরা হলেন ক্যাপ্টেন আরিফিন, করপোরাল নুর মোহাম্মদ, সৈয়দ মঈন, আবু জাফর ও রুহুল আমিন। তাঁরা ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে সিনহা হত্যার খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁরা ঘটনাস্থলে পুলিশের অসহযোগিতা ও দায়িত্ব পালনে বাধার বিষয়ে আদালতে তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম বলেন, রবিবার (১০ অক্টোবর) পর্যন্ত পাঁচ দফায় সিনহা হত্যা মামলার ২৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার ১১ অক্টোবর আরও ছয়-সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হতে পারে। মামলার মোট সাক্ষী ৮৩ জন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি ও রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার পাঁচ দিন পরে ৫ আগস্ট কক্সবাজারের আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম।