৬ শতাংশে মূল্যস্ফীতি নামিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব : পরিকল্পনামন্ত্রী

৬ শতাংশে মূল্যস্ফীতি নামিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব : পরিকল্পনামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা অলৌকিক, প্রায় অসম্ভব। তবে সে লক্ষ্যে সবাইকে চেষ্টা করতে হবে। এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর কারসাজির কারণে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। সড়কে চাঁদাবাজির কারণেও ভোক্তাকে অধিক মূল্য দিতে হয়, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। শুক্রবার (২৩ জুন) রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির উদ্যোগে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক ছায়া সংসদ বিতর্ক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কেউ আমাদের বস নন, আমরাই আমাদের বস। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে, শর্ত আরোপ করে নি। সরকার দেশের জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ করে থাকে। 

তিনি বলেন, সরকার প্রান্তিক জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় ভর্তুকি দিয়ে থাকে। তবে ভর্তুকি প্রদান কোনও দীর্ঘমেয়াদী কৌশল হতে পারে না। সে কারণে এবার কয়েকটি খাতে ভর্তুকি কমানো হয়েছে।

বিদেশে টাকা পাচার নিয়ে মন্ত্রী বলেন, পাচারকৃত টাকা দেশে ফেরত আনা কঠিন। পাচারকারীরা ফেরত আনার জন্য টাকা পাচার করে নি। উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনে রাজনৈতিক, আঞ্চলিক চাপ থাকে; যা অনেক সময় উপেক্ষা করা যায় না। এসব চাপের কারণে অনেক সময় প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যায়। 

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলে সেটি মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। রিজার্ভের ঘাটতিতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমায় মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এ ছাড়া রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, কর ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের ঘাটতি ও রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতার অভাবে তা অর্জন সম্ভব হবে না। এ দেশে বাজেট বাস্তবায়নের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি। টাকা পাচার বন্ধ ও পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনও দিক-নির্দেশনা এবারের বাজেটে দেখা যায় নি। আর্থিক খাতের অনিয়ম দূর করে প্রতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে গুণগতভাবে বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মো. রইছ,  ড. এস এম মোর্শেদ, গবেষক তাহরিন তাহরীমা চৌধুরী, সাংবাদিক মাঈনুল আলম ও সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা। ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এবারের বাজেট জনবান্ধব’ শীর্ষক ছায়া সংসদে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকদের পরাজিত করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়। বিজয়ী দলের মাঝে প্রতিযোগিতা শেষে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।