শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যেতে বললেন প্রধানমন্ত্রী।

বাসস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যানবাহন ভাঙচুর করা তাঁদের কাজ নয়। অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙ্গা এটা ছাত্রদের কাজ নয়, এটা কেউ করবেন না। দয়া করে যাঁর যাঁর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যান, লেখাপড়া করেন। আর যাঁরা দোষী, তাঁদেরকে খুঁজে বের করে অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে, সেটা আমরা করবো।’ শেখ হাসিনা আজ বুধবার (পহেলা নভেম্বর) সকালে বিজয়ের মাসের প্রথমদিন বাংলাদেশ শিশু একাডেমীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল এবং রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১২ তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ‘জয়িতা টাওয়ার’ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। ‘লেখাপড়া শিখে আজকের শিশুদের আগামীতে দেশের জন্য কাজ করতে হবে,’ উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ভবিষ্যতের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আজকের ছেলে-মেয়েদের নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে হবে।’ ‘আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী এ ব্যাপারে অনেক সতর্ক। সঙ্গেসঙ্গেই অপরাধীদের খুঁজে বের করা হয়েছে।’ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে পরপর পথচারি নিহত হবার ঘটনা তিনি যথাযথভাবে তদন্ত করে দেখারও নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, আমি এটুকুই চাই আমাদের দেশের যে উন্নয়ন আমরা করে দিচ্ছি, সেটাকে ধরে রেখে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আজকের শিশুরা আগামী দিনের সোনার বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক হবে। সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাতে রামপুরায় গাড়ি চাপায় শিক্ষার্থী মাঈনুদ্দীন ইসলাম দুর্জয় নিহত হবার পর এর প্রতিবাদে রাজধানীতে কয়েকটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর আগে গত ২৪ নভেম্বর নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানও গাড়ি চাপায় নিহত হন। পরদিন নিহত হন এক সংবাদকর্মী। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলাম বক্তব্য দেন। বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর চেয়ারপারসন লাকী ইনাম এবং জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খানও বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে জাতির পিতার ম্যুরাল এবং ‘জয়িতা টাওয়ার’এর ওপর দু’টি ভিডিওচিত্রও পরিবেশিত হয়। ‘আজকের শিশুরাই হবে একচল্লিশের উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের কর্ণধার’ উল্লেখ করে তাঁদের লেখাপড়া করা এবং বাবা-মা-অভিভাবকদের আদেশ মান্য করার পাশাপাশি রাস্তাঘাটে চলাচল করতে ট্রাফিক আইন মেনে চলারও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা সকলের জন্য প্রযোজ্য রাস্তাঘাটে চলার সময় সতর্ক থাকতে হবে, ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। রাস্তার যে কোনও স্থান থেকে পারাপার হওয়া যাবে না। নির্দিষ্ট পারাপারের স্থান দিয়ে পার হতে হবে। কেননা, একটা চলমান গাড়ি ব্রেক ধরলে তাঁর থামতে সময়ের প্রয়োজন হয়। জনবহুল এই দেশে গাড়ি চালানোর জন্য এ সময় সঠিকভাবে প্রশিক্ষণের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন এবং তাঁর সরকার উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন।