ডন প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক। আজ বুধবার (৩০ মার্চ) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির ডিন নির্বাচনে হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি।
অথচ গত ২৩ মার্চ রাতে ৫ শর্তে ৪ বছরের জন্য ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুককে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু উপাচার্য পদে নিয়োগ পাওয়ার পরও ডিন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী গত রবিবার (২৭ মার্চ) রিটার্নিং কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুকের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘৩০ মার্চ আইন অনুষদের ডিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে আমি অধ্যাপক জাকির হোসেন ও অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। গত ২৩ মার্চ তারিখে অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুককে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, তিনি এই নিয়োগে সত্যি অনেক আনন্দিত।’
‘বিশ্ববিদ্যালয়টিকে শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে নিতে যা যা দরকার তিনি সবই করবেন।’
‘পত্র পত্রিকায় তিনি আরও বলেছেন, তিনি কখন যোগদান করবেন এখনো সিদ্ধান্ত নেন নি। তার মানে তিনি যে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে যোগদান করবেন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ হতে তা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। কেননা কোনও পত্রিকায় সাক্ষাতকারে তিনি যোগদান করবেন না মর্মে বক্তব্য দেন নি। একইসঙ্গে তিনি ডিন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও বহাল রয়েছেন। এক্ষেত্রে উপাচার্য হিসেবে যোগদানের ইচ্ছায় ও ডিন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পিছনে পরিকল্পিত অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। পরবর্তীতে এই বিষয়ে আইনগত জটিলতার সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় আপনার সুচিন্তিত আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, আমি অভিযোগ দিয়েছি, কারণ উপাচার্য পদে নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে রাষ্ট্রপতির আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে উল্লেখ আছে।
‘কিন্তু নজিরবিহীন ঘটনা এই যে, আজ ৬ দিন যাবৎ তিনি উপাচার্য পদে যোগদান করেন নি। বিশ্ববিদ্যালয়কে লিখিতভাবে যোগদান করবেন না বলেও জানান নি। একদিকে তিনি যোগদান করবেন বলে পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন, অন্যদিকে নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর পিছনে তার অসৎ উদ্দেশ্য আছে।’
এদিকে বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলেই দাবি করেছেন ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক।
তিনি বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেছেন, আমি এখনো যোগদান করি নি। যোগদান করার বিষয়ে আমি এখনো সিদ্ধান্ত নিই নি, চিন্তা-ভাবনা করছি। এ বিষয়ে আমার স্বাধীনতা আছে।
‘আর যতক্ষণ পর্যন্ত আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ততক্ষণ পর্যন্ত আমার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ আছে।’
ডিন নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, এটা কোনও অভিযোগ না। একজন প্রার্থী একটা পয়েন্ট আউট করেছেন যে, অপর প্রার্থী উপাচার্য পদে মনোনীত হয়েছেন।
‘এখন যিনি উপাচার্য পদে মনোনীত হয়েছেন, তিনি যদি যোগদান না করেন, তাহলে এটা নিয়ে কোনও ইরেগুলারিটি থাকছে না।’
‘তবে তিনি লিখিতভাবে কিছু না জানালেও মৌখিকভাবে যোগদান করবেন না বলে আমাকে জানিয়েছেন।’
‘যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি যোগদান না করেন ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি বৈধ প্রার্থী।’