জীবন এমনই : আব্দুল্লাহ আল ফারুক মুরাদ 

এবার শীত এলে 
বেশ করো বলে দেবো
তুই ক্ষণিকের জন্য আসিস না!

তোর হিমবাহে আড়ষ্ট হয়ে লেপে মুখ গুজে কতো বলেছি 
তুই কবে যাবি?

কতো দিন...
আমি শিমুল তুলো কুড়াতে গেলে
সন্ধ্যা নামিয়ে দিতি বেলা না গড়াতেই 
আর ওদিকে বাবা কঞ্চি হাতে
লাল চোখে পায়চারি করতো কখন দু’ ঘা কষে দেবে।

আহ্ সকালে ঘুম থেকে ওঠা কি যায়!
রাতে শিশির কনা চুইয়ে টপ টপ করে
চাল হতে মাটিতে পড়তো।

মা বলে উঠতো...
কীরে স্কুলে যাবি না হতচ্ছাড়া

হরেক রকমের বাহারি পিঠা
আহ্...
বোঝাতে পারবো না সে কি সময় আমি হারিয়ে ফেলেছি।

দুপুরে স্কুল হতে বাড়ি এসে
দু-মুঠো খেয়েই তড়িঘড়ি করে যেতাম মাঠে
তারপর পিঠা মেলায়।

দিনগুলো যেনো স্বপ্নে মাখা
মধুর এক বিহঙ্গ পতঙ্গ
আসমান ছুঁয়ে যাওয়া আমি।

আর এখন?
জীবন যেনো অতিষ্ঠ
কাকফাঁটা রোদে মগজ গলে পড়ে
তাপদাহে মুখটা পুড়ে ছাই।

এ কেমন সময়?
সবকিছুই বিষাক্ত লাগে
রাতে ঘুমের ঘোরে বিষণ্ন দিনের কথা মনে পড়লেই 
বুকটা ধপ করে উঠে।
এই বুঝি ফের ঝলসে ওঠি এই মাঝরাতে।

কী বীভৎস..
ভ্যাপসা গরম 
পুরো শরীর যেনো জলন্ত বারুদ 
দেশলাইয়ের এক ঘষাতেই পুড়ে ছাই হয়ে যাই।

এই তাপদাহ তুই কবে যাবি?
আর কখনো আসিস না আমার আঙিনায় 
তোকে যদি টিফিনের ছুটির মতো তাড়িয়ে দিতে 
পারতাম, তবে তাই করতাম।

জীবন এমনই
কখনো খরস্রোতা নদী
কখনো কানায় কানায় ভরা যৌবন।

তোমাকে বাঁচতে হলে সবই
বিলকুল ঠাট্টার ছলে মেনে নিতে হবে
নয়তো তুমি অচল পাঁচ পয়সার মতো।