একদিন আগেই রবিবার দুবাইয়ে নোঙর করবে এমভি আবদুল্লাহ

একদিন আগেই রবিবার দুবাইয়ে নোঙর করবে এমভি আবদুল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : সোমালি জলদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ’র দুবাইয়ে নোঙর করার কথা ছিলো ২২ এপ্রিল। কিন্তু গতি বাড়ায় জাহাজটি একদিন আগেই রবিবার সেই বন্দরে পৌঁছাবে বলে জানা গেছে। এরপরই শুরু হবে জাহাজটিতে থাকা নাবিকদের দেশে ফেরার আনুষ্ঠানিকতা। তবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় জেনারেল স্টুয়ার্ড নূর উদ্দিন ও সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরী আর জাহাজে করে দেশে ফিরতে চান না। তাঁরা বিমানে দুবাই থেকে দেশে ফিরতে চান। মোট ২৩ নাবিকের মধ্যে ওই দুজন ছাড়া বাকি ২১ জন একসঙ্গে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে করেই দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে।

সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মোজাহেদুল ইসলামের মা ফেরদৌস আক্তার বলেন, ছেলের সঙ্গে এখন প্রতিদিনই কথা হয়। আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো আছে তাঁরা। আমাদেরও দুশ্চিন্তা কমেছে। তবে টেনশন থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে পারি নি। ছেলে বলছে, তাঁর মানসিক অবস্থা ভালো নেই; দ্রুত দেশে ফিরতে চায়। জাহাজে করে দেশে ফিরতে আরও সাত-আট দিন দেরি হবে। তাই দুবাই থেকে বিমানে দেশে ফিরবে বলে জানিয়েছে। তবে কবে কোথায় আসবে, তা এখনও জানে না সে। এটা জাহাজের মালিকপক্ষ ঠিক করবে।

এমভি আবদুল্লাহ’র মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ জানিয়েছে, জাহাজটি দুবাইয়ে নোঙর ফেলবে ২১ এপ্রিল। সেখানে পণ্য খালাস কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরই নাবিকদের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

কেএসআরএমের সিইও মেহেরুল করিম বলেন, দুজন নাবিক দুবাই থেকে বিমানে দেশে ফিরতে চান। বাকি ২১ জন জাহাজে করেই দেশে ফিরবেন। ওই দুজন কখন, কীভাবে দেশে ফিরবেন, সেটা আমরা জাহাজ নোঙর করার পর ঠিক করবো। যিনি যেভাবে আসতে চান, তাঁকে সেভাবেই দেশে আনবো।

জলদস্যুদের কবল থেকে জাহাজটি মুক্ত হওয়ার আগেই নাবিকেরা কে কোন জায়গা থেকে সাইন অফ (জাহাজের কর্ম হতে অব্যাহতি) করবেন, তার তালিকা চূড়ান্ত করে রাখে মালিকপক্ষ।

সূত্র জানায়, মালিকপক্ষের নির্দেশে এ ব্যাপারে এমভি আবদুল্লাহ’র ক্যাপ্টেনকে একটি তালিকাও দিয়েছিলেন নাবিকরা। সেই তালিকায় ২৩ নাবিকের মধ্যে ১৮ জন আরব আমিরাতের বন্দর থেকে সাইন অফ করবেন বলে জানিয়েছেন। বাকি পাঁচজন জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছালে সাইন অফ করবেন বলে জানান। তবে এখন বেশিরভাগ নাবিক সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলেছেন। ২১ নাবিকই এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে করে ফিরতে চান দেশে।

কেএসআরএম’র ডিএমডি শাহরিয়ার জাহান রাহাত জানান, জাহাজটি ২২ এপ্রিল দুবাইয়ে নোঙর ফেলার কথা থাকলেও তা এখন একদিন এগিয়ে যাচ্ছে। ২১ এপ্রিল এটি নোঙর করবে সেখানে। ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় জলদস্যুমুক্ত হয় জাহাজটি। এরপর আরব আমিরাতের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন নাবিকেরা। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় জাহাজটি সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬৮৭ নটিক্যাল মাইল এবং দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দর থকে ৯৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিলো। এটি নিরাপদ জোন হিসেবে পরিচিত। এজন্য দুশ্চিন্তাও কিছুটা কমেছে নাবিকদের। ফুরফুরে মেজাজে থাকার কিছু ছবিও পাঠিয়েছেন তাঁরা।