শহিদ মিনারে প্রতিবাদী গান-স্লোগানে শ্রাবণের অগ্নিঝরা বিকেল
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : হাজারো মানুষের একাত্মতা, প্রতিবাদী গান আর স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারসহ আশপাশের এলাকা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিতে শনিবার (৩ জুলাই) দুপুর থেকেই সেখানে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার হাজারো মানুষ। স্লোগান আর স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে পুরো এলাকা।
জানা গেছে, হালকা বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুপুর আড়াইড়ার পর থেকে দলে দলে শহিদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। সময় যতো যেতে থাকে, আন্দোলনকারীদের সংখ্যা ততোই বাড়তে থাকে, আর তা জ্যামিতিক হারে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মানুষের ঢল শহিদ মিনার এলাকা ছাপিয়ে চাঁনখারপুল, দোয়েল চত্বর, জগন্নাথ হল মোড় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল টাওয়ার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বেশ কয়েকজন রিকশাচালককেও স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে তীব্র হতে থাকে বিক্ষোভকারীদের স্লোগানের ধ্বনিও। পুরো এলাকাজুড়ে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে,’ ‘জাস্টিস জাস্টিস উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দিবো রক্ত,’ ‘স্বৈরাচারের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে,’ ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো,’ ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর,’ এসব স্লোগান দিচ্ছেন।
এর আগে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালনে এদিন সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে শহিদ মিনার অভিমুখে রওনা হন।
এদিকে বেলা আড়াইটার দিকে সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান শেষে তাঁরা একটি মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার অভিমুখে রওনা করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা এ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পাশাপাশি জড়ো হচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধারাও। শহিদ মিনারের মূল বেদি এবং সংলগ্ন সড়কে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন তাঁরাও।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এই মুহূর্তে সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি। কারণ এই সরকারের অধীনে আমাদের ভাইয়ের খুনিদের বিচার আমরা পাবো না। আমাদের অনেক ভাইকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। একমাত্র সরকারের পদত্যাগ ছাড়া এইসব খুনের বিচার হবে না।
এদিকে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে জড়ো হয়ে পরে শহিদ মিনারে যান সঙ্গীতশিল্পীরা। সেখানেই তাঁরা সংহতি জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। বিকেল ৩টার দিকে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে ‘গেট আপ, স্ট্যান্ড আপ’ স্লোগানকে সামনে রেখে জড়ো হন তাঁরা। এ সময় তাঁরা সকলেই আলোচিত তরুণ র্যাপার হান্নানকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানান।